স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানা খাঁন কামাল বলেছেন, ফেসবুকে মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে রামু, নাসিরনগর, ভোলায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করা হয়েছে। যখনই এসব ঘটনা আপনারা (গণমাধ্যমকর্মী) ফেসবুকে দেখেন, তার সত্যতা যাচাই করবেন। উত্তেজনা সংবরণ করবেন। খামাখা উসকানিতে কাণ্ড ঘটিয়ে বসবেন না। ইতিমধ্যে রংপুরে এহেন কাণ্ড ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখলাম রংপুরে পরিতোষ নামের এক অল্প বয়সী ছেলে ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দিয়েছে। সেটা কেন্দ্র করে সহিংসতা। আমাদের পুলিশ বাহিনী তার বাড়িঘর রক্ষায় সর্বত্র চেষ্টা করেছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে তার পাশের গ্রামে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট–ভাঙচুর করা হয়েছে। এটার আমরা নিন্দা করছি।
মঙ্গলবার রাজধানীর কুর্মিটোলা র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরে তথ্য প্রযুক্তির সার্বিক ব্যবহার এবং র্যাবের সকল ব্যাটালিয়ন ও ক্যাম্পে বিস্তৃত করার জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসময় তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত কোনো পূজা মণ্ডপে কোনো কিছু হয়নি। এবারই প্রথম ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটানো হয়েছে। কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে কিছু মানুষ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ে হামলা করেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসন যখন পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছিল, তখন তাঁরা গুলি করতে বাধ্য হয়েছেন। এ ঘটনায় আগে চারজন আর আজকে হাসপাতালে আরেকজন শাহাদত বরণ করেছেন। কার উদ্দেশ্য সফল হওয়ার জন্য এই মৃত্যু?
তিনি বলেন, দেশ অনেক পথ এগিয়ে গেছে। এটা বিনষ্ট করার জন্য আজকে দেখছি নানান ধরনের চক্রান্ত। এই অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশের হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও মুসলিম সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) আজকের এই ডেটা হাব উদ্বোধনের মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে এই প্রযুক্তি অনেক বেশি সহায়তা করবে। র্যাব প্রতিনিয়ত প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হচ্ছে।
র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, র্যাবে এখন থেকেই পেপারলেস ডিজিটাল অফিস চালু করা হচ্ছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। আজ থেকে র্যাবের প্রত্যেক সদস্যের তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, সংস্থাটিতে যে বাহিনী থেকেই জনবল নিয়ে আসা হোক। তাদের কাজ শুরুর দিন থেকে আবার বাহিনীতে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত তাদের সবকিছু সংরক্ষণ থাকবে।
অনুষ্ঠানে র্যাব ডিজি জানান, অ্যাপের মাধ্যমে প্রত্যেক সদস্যের রেশন, ছুটিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা নিজের মোবাইল থেকে দেখতে পাবেন। বিভিন্ন বাহিনী থেকে আসা সদস্যদের আবার বাহিনীতে ফিরতে যেসব ঝামেলা হতো এখন থেকে সেটা আর হবে না। অফিসে কাজ এখন অনলাইনে সম্পন্ন করা হবে।
র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) ড. মইনুর রহমান চৌধুরী এবং এনটিএমসির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসান।