
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি:
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে মানিকগঞ্জে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী আওয়ামীলীগ নেতা বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। বাচ্চু মিয়া মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি।
সম্প্রতি মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার ও সদর থানা বরাবর দাখিল করা এক অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরও বাচ্চু মিয়া বহাল তবিয়তে এলাকায় প্রভাব বিস্তার এবং নানা প্রতারণা করে আসছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বাচ্চু মিয়া চাকরি দেওয়ার নামে রহিম বাদশা নামে এক ব্যাক্তির নিকট থেকে ১০ লক্ষ টাকা চুক্তিতে নগদ ৬ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে। চাকরির ব্যাবস্থা না করে বরং হুমকি-ধামকি এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন তিনি। অভিযোগ পত্রে বাচ্চু মিয়ার ছেলেকেও(মিলন) অভিযুক্ত করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে অভিযোগদানকারী রহিম বাদশা বলেন, “কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজে (বর্তমান মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ) চাকরির কথা বলে আমার বাবার কাছ থেকে বাচ্চু মিয়া ২ বছর আগে ৬ লক্ষ টাকা এনেছে। ২ মাসের মধ্যে চাকরি দেয়ার কথা থাকলেও চাকরির ব্যাবস্থা না করে উল্টো আজ-কাল করে ঘুরাতে থাকে। পরে উনার কাছ থেকে টাকা ফেরত চাইলে উনি টাকার ব্যাপারে অস্বীকার করে মারধর করার হুমকি দেয়”।
এ বিষয়ে আরেক ভুক্তভোগী দিনমজুর মো. শরিফ বলেন, “আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বাচ্চু মিয়া আমি সহ আরো ৪ জনের কাছ থেকে ২৫ হাজার করে টাকা নিয়েছে। এমন সে অনেকের সাথেই করেছে। সে এখনো এলাকায় থাকে অথচ আমরা অসহায়ের মতো ঘুরি। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই”।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ন-আহবায়ক(মানিকগঞ্জ জেলা কমিটি) রমজান মাহমুদ বলেন, “আওয়ামীলীগ ও তাদের দোসর যারা এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এবং বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত আছে তারা অবশ্যই শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। আমরা দেখছি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অবস্থান নিয়েছে এবং বিচারের মুখোমুখি এনেছে। তবে বিভিন্ন স্থানে এখনো কিছু আওয়ামী ফ্যাসিস্টের দোসর অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
আমরা জোর দাবী করি, প্রশাসন অতি শীঘ্রই এই অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে দ্রুত গ্রেফতার করুক এবং যে অসহায় পরিবার থেকে ৬ লক্ষ টাকা নিয়েছে তা অতি দ্রুত ফিরিয়ে দিক। আর যদি এতে প্রশাসন ব্যর্থ হয় কিংবা অবহেলা করে তবে অতি দ্রুত একজন সাধারণ মানুষের পাশে দাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হবো। আমরা আশাকরি, প্রশাসন এতে সুদৃষ্টি দিবে”।
অভিযোগ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসির নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে এক পর্যায়ে বাচ্চু মিয়া এবং তার ছেলে মিলন টাকা নেওয়ার বিষয়ে স্বীকার করেন।