১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত হওয়া সব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার

গতপ্রি ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আইন মন্ত্রণালয়ের গত ‘১০০ দিনের কার্যক্রম’ নিয়ে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা জানান, সাইবার সিকিউরিটি আইনে ‘কথা বলার অধিকারের জন্য’ যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলোও সব বাতিল হয়ে যাবে। তবে হ্যাকিং ও সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলাগুলো চলমান থাকবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সারা দেশের ৪ হাজার ৩০০ জন আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এতো বেশি সংখ্যক নিয়োগ বাংলাদেশে এর আগে ঘটেনি। এর মাধ্যমে সব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে। এখন যে ঢালাও মামলা হচ্ছে, মামলা বাণিজ্য করা হচ্ছে; তাও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

যারা এমন ‘মামলা বাণিজ্য’ করছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এই ব্যবস্থা নিবোই।’

তিনি জানান, এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে ২২৯ জন আইন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন সংশোধন অধ্যাদেশ বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, অধ্যাদেশ পাস হলে সে অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু হবে।

উপদেষ্টা জানান, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগে নতুন আইন করা হবে। আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই এটা করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।

আইন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা। এই হিসাব বিবরণী যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা কাজ করছি। ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার অভিযোগে রাজনৈতিক দলের বিচারের সুপারিশ করতে পারবে— এমন প্রস্তাব দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের সংশোধনের অধ্যাদেশ বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উঠবে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নেবে, এই প্রস্তাব গ্রহণ করবে কি করবে না।’

সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করা হবে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সরকার ভালো একটা নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে উপদেষ্টারা আগের পেশায় ফিরে যেতে চায়।’

এরইমধ্যে বিভিন্ন মামলায় পলাতক আসামিদের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, দেশে কোনও আসামিকে না পেলে রেড এলার্ট জারির আবেদন করতেই পারি। বাংলাদেশ ইন্টাপোলের সদস্য।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা নিজে পালিয়েছেন, পরিবার এবং স্বজনদেরও তিনদিন আগে পাঠিয়েছে। অথচ ফোনকলের মাধ্যমে দলীয় কর্মীদের বিপদে ফেলছেন। নেতাকর্মীদের তাকে প্রশ্ন করা উচিত, কেন পালিয়েছেন?’

আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার আওয়ামী লীগের মতো দমন-পীড়ন চায় না। অযৌক্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে নানা দুর্ভোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সরকার বিষয়গুলো দেখছে। কঠোর হলে সরকার ভালোভাবেই কঠোর হবে।