নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে সাহাব উদ্দিন নামের এক আড়তদারের মেসার্স খাজা ভাণ্ডারে অবশেষে অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। ওই অভিযানে ৩০ টন সরকারি চাল পাচারের উদ্দেশ্যে অন্য বস্তায় ভরার সময় জব্দ করা হয়। বুধবার দিবাগত রাতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার দিবাগত রাতেই সরকারি চাল অন্য কোম্পানির বস্তায় ভরে বিক্রি ও পাচার করার উদ্দেশ্যে ৬ গাড়ি চাল আসার খবরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল অভিযানে গেলেও অদৃশ্য কারণে অভিযান পরিচালনা না করে কাগজপত্র নিয়ে চলে আসার খবর প্রকাশ করেছিল প্রিয়দেশ নিউজ। পাহাড়তলী জোনের এসি বিষয়টি জানেন না বলে অস্বীকার করলেও খাজা ভাণ্ডারের স্বত্ত্বাধিকারী সাহাব উদ্দিন এসির কাছে কাগজপত্র দেওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন। সেই বিষয়ে প্রিয়দেশ নিউজে ‘চট্টগ্রামে সরকারি চাল কোম্পানির বস্তায় ভরে পাচার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর অবশেষে রাতেই যৌথবাহিনী খাজা ভাণ্ডারে অভিযান পরিচালনা করে।
যৌথবাহিনী জানায়, গুদামটিতে অবৈধভাবে চাল মজুদ করে রাখা হয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চলে। এসময় প্রায় ৩০ টন চাল অবৈধভাবে মজুদ পাওয়া যায় সেখানে। চালের বস্তাগুলো পুলিশের জিম্মায় রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরেজমিনে জানা যায়, প্রতিনিয়ত রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে কম দামে চোরাইভাবে চাল ক্রয় করেন সাহাব উদ্দিন। সেই চাল অন্য কোম্পানির বস্তায় ভরে চড়া দামে বাজারে বিক্রি ও পাচার করে থাকেন। এর মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সাহাব উদ্দিন।
স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রামে চালের কোনো সংকট না থাকলেও অসাধু আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে চালের বাজার অস্থির করে যাচ্ছেন। এর উপর সরকারি চাল অন্য কোম্পানির বস্তায় ভরে চড়া দামে বিক্রি করা জনসাধারণের সাথে প্রতারণা। প্রশাসন এভাবে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখলে চালের বাজারের অস্থিরতা কমবে। তবে চাল পাচারকারী খাজা ভাণ্ডারের মালিক সাহাব উদ্দিনসহ পুরো সিন্ডিকেটকে আটক করে আইনের আওতায় না আনলে বাজার পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে না।
এ বিষয়ে মেসার্স খাজা ভাণ্ডারের সাহাব উদ্দিন বলেন, এসব চাল আমি রেশন স্টোর থেকে ক্রয় করি। আমার কাছে কাগজপত্র আছে। সেগুলো অভিযান পরিচালনাকারীদের কাছে দিয়েছি। তবে বৈধভাবে এসব চাল ক্রয়-বিক্রয় করলে বর্তমান ও পূর্ববর্তী অভিযান কেন পরিচালনা হয়েছে সেসব প্রশ্নের উত্তর তিনি দিতে পারেননি।
পাহাড়তলী থানা সূত্র জানায়, থানা থেকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে টিম ঘুরে এসেছে। পরবর্তীতে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করেছে এবং কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখছে।
পর্ব-৩: চট্টগ্রামে সরকারি চাল পাচার সিন্ডিকেটের হোতা সাহাব উদ্দিন
পর্ব-৪: সরকারি চাল পাচার চক্রের হোতা সাহাব উদ্দিন কি অধরাই থেকে যাবে?