দিল্লিতে গোমূত্রের আজব পার্টি

গোমূত্র পার্টি

চীনে যখন করোনার প্রকোপ শুরু হয়ে ছিল, তখনই বিজেপি এবং তার শাখা সংগঠনগুলির কোনও কোনও নেতা বলেছিলেন, গোমূত্র পান করলে করোনা হবে না। ভারতে করোনা ভাইরাস প্রবেশ করার পরে সেই আশ্চর্য কাজটিই প্রকাশ্যে করে দেখাল গেরুয়া শিবির। আয়োজন হল গোমূত্র পার্টির।
বাবা চক্রপানি মহারাজ

স্বঘোষিত এই বাবাজির ধর্মীয় গোষ্ঠীর নাম অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। কেন্দ্রীয় শাসক দল বিজেপির সঙ্গে তাঁর ভালই ঘনিষ্ঠতা। এর আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে এসেছেন তিনি। কেরালায় বন্যায় সময় বলেছিলেন, যাঁরা গোমাংস খান, তাঁদের ত্রাণ দেওয়া উচিত নয়।
গোমূত্র ভক্ত

সেই চক্রপানি বাবাই এ বার দিল্লিতে গোমূত্র পার্টির আয়োজন করেছিলেন। যেখানে প্রায় ২০০ জন যোগ দিয়েছিলেন। গোমূত্র, গোবর, দুধ, ঘি দিয়ে তৈরি হয়েছিল পানীয়। ভক্তরা খেলেনও তা ঢকঢক করে। এতেই না কি প্রতিহত হবে করোনা।
বিজেপির লাইনেই বাবাজি

চক্রপানি মহারাজ প্রথম নন, এর আগে গোমূত্র খেয়ে করোনা প্রতিহত করার কথা বলেছিলেন আসামের বিজেপি নেত্রী সুমন হরিপ্রিয়। উত্তরপ্রদেশ থেকে জেতা বিজেপির বিতর্কিত সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুর বলেছিলেন গোমূত্র খেলে ক্যান্সারও আটকানো যায়।
কারা গেলেন পার্টিতে

শনিবার চক্রপানি মহারাজের গোমূত্র পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ২০০ জন। তাঁদের অধিকাংশই মহারাজের ভক্ত। বহু গরিব মানুষ নিছক অন্ধবিশ্বাস থেকে হাজির হয়েছিলেন সেখানে।
মাথায় হাত চিকিৎসকদের

গোমূত্র পার্টির কথা শুনে মাথায় হাত চিকিৎসকদের। তাঁদের বক্তব্য, স্বঘোষিত বাবাজিরা বলছেন গোমূত্র খেলে শরীরের ইমিউনিটি বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ, রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়বে শরীরে। কিন্তু বাস্তব ঠিক তার বিপরীত। গোমূত্র এবং গরুর গোবর খেলে শরীর আরও খারাপ হতে পারে।
হতে পারে যক্ষ্মা

দিল্লির এক চিকিৎসকের বক্তব্য, কিছুদিন আগে উত্তরাখণ্ডে গোমূত্র খেয়েছিলেন এক ব্যক্তি। প্রবল শরীর খারাপ নিয়ে কিছুদিন আগে তিনি এসেছিলেন চিকিৎসকের কাছে। তাঁর গোটা শরীরে যক্ষ্মা ছড়িয়ে গিয়েছে।
কে বোঝে কার কথা

এক দিকে চিকিৎসকরা যখন বিজ্ঞানের কথা বলছেন, তখন হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দলের মদতে স্বঘোষিত বাবাজিরা দিকে দিকে গোমূত্র পার্টির আয়োজন করে বেড়াচ্ছেন। প্রশাসনও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
গ্রেফতার করা হোক

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রাক্তন আমলার বক্তব্য, চাইলে এই বাবাজিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে সে কাজ হচ্ছে না।