ব্যাটার-বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুন্যে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশ ৫৪৬ রানের পাহাড় সমান ব্যবধানে হারিয়েছে আফগানিস্তানকে। নিজেদের ২৩ বছর ও ১৩৮ টেস্টে ইতিহাসেই বড় জয়ের স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। এমনকি টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়ে এটি তৃতীয় সেরা। কিন্তু শতাব্দীর সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। গত ৮৯ বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড।
আজকের আগে সর্বশেষ বড় জয় ছিল ১৯৩৪ সালে। দ্য ওভালে ১৯৩৪ সালে অস্ট্রেলিয়া ৫৬২ রানে হারিয়েছিলো ইংল্যান্ডকে। টেস্টের সবচেয়ে বড় জয়ের বিশ্ব রেকর্ড ইংল্যান্ডের। ১৯২৮ সালে ব্রিজবেনে ইংল্যান্ড ৬৭৫ রানে হারিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়াকে। এতদিন তৃতীয় বড় জয় ছিলো ৫৩০ রানের। ১৯১১ সালে মেলবোর্নে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫৩০ রানে হারিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। ১১২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার সেই রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে নিজেদের জয়কে তৃতীয়স্থানে তুললো বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের এই অনন্য রেকর্ড জয়ের পেছনে বড় অবদান ছিলো দলের পেসারদের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে রেকর্ড জয়ের টেস্টে ১৪ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের তিন পেসার তাসকিন-এবাদত ও শরিফুল। যা কোন টেস্টে বাংলাদেশ পেসারদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড । আগেরটি ছিলো ২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩ উইকেট নিয়েছিলো বাংলাদেশের পেসাররা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে শরিফুল-এবাদত ৫টি করে এবং তাসকিন ৪ উইকেট নেন।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেট নেন বাংলাদেশের পেসাররা। এখানেও নতুন রেকর্ডের জন্ম দিয়েছেন তাসকিন-এবাদত ও শরিফুলরা। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের কোন টেস্টেও এক ইনিংসে পেসারদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের নজির এটি। আগেরটি ছিলো ২০০২-০৩ মৌসুমে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন পেসাররা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের দুই ইনিংসে ১৪৬ ও ১২৪ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ম্যাচে ২৭০ রান করে তামিম ইকবালকে পেছনে ফেলেন শান্ত। টেস্টে এক ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে তামিমের রান ২৩১। এই তালিকায় ২৮১ রান নিয়ে সবার উপরে মোমিনুল হক।
টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরিতে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটে পঞ্চমস্থানে জায়গা করে নিয়েছেন শান্ত। দুই ইনিংসে গড়ে ৮২ দশমিক ৮২ স্ট্রাইক রেট ছিলো শান্তর। এই তালিকায় সবার উপরে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার। ২০১৪ সালে কেপ টাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯০ দশমিক ৯০ স্ট্রাইক রেটে দুই ইনিংসে ১৩৫ ও ১৪৫ রান করেছিলেন ওয়ার্নার।
মিরপুরে বাংলাদেশের কাছে হেরে যাওয়া টেস্টের দুই ইনিংসে যথাক্রমে- ১৪৬ ও ১১৫ রান করে আফগানিস্তান। দুই ইনিংস মিলিয়ে সর্বমোট ২৬১ রান করে আফগানরা। টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে কোন দলের দুই ইনিংস মিলিয়ে এটিই সবচেয়ে কম রান। আগেরটি ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০১৮ সালে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৩২৪ রান করেছিলো ক্যারিবীয়রা।