ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী সামর্থ্য থাকলে এবং শরীর সুস্থ থাকলে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য হজ অবশ্য পালনীয়। বছরে একটা নির্দিষ্ট সময়েই হজ করা যায়। বাংলাদেশ থেকেও প্রতি বছর অনেক মানুষ হজ পালন করতে যান।বাংলাদেশ থেকে ২০২০ সালে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে হজে যাওয়ার কোটা এক লাখ ৩৭ হাজার।এবার সৌদি আরবে যে হজ অনুষ্ঠিত হবে তাতে সব মিলে এক হাজারেরও কম মানুষ অংশ নেবার সুযোগ পাবে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলো যে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বাইরের দেশ থেকে হজ করতে যাবার সুযোগ বাতিল করা হচ্ছে এবার। হজের সুযোগ পাবে শুধু সৌদি আরবের বাসিন্দা এবং দেশটিতে বসবাসরত বিদেশিরা।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের পাঠানো এক বিবৃতি থেকে জানা যাচ্ছে, সৌদি আরবের বাসিন্দাদের জন্যও যে হজ করার সুযোগ খুব একটা উম্মুক্ত থাকছে তা নয়।
বিবৃতিটিতে বলা হয়, সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফায়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনকে টেলিফোন করে হজ বিষয়ক সর্বশেষ পরিস্থিতি জানিয়েছেন।
যে এক হাজারেরও কম মানুষের অংশ নেবার সুযোগ হবে মুসলমানদের বার্ষিক এই বৃহত্তম সম্মেলনে, সেখানে বিদেশ থেকে অল্প কয়েকজনকে প্রতীকি হিসেবেও অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে।
তবে কিভাবে এই অংশগ্রহনকারীদের বাছাই করা হবে তা নিয়ে এখনো কোন ঘোষণা আসেনি।সোমবার সন্ধ্যায় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে টেলিফোন করেন।
এই বছর হজে অংশ নেবার জন্য বাংলাদেশ থেকে ৬১ হাজার মানুষ নিবন্ধন করেছিলেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী টাকাও জমা দিয়েছিলেন তারা।এখন তাদের অর্থ কি ফেরত দেয়া হবে, দিলে কোন প্রক্রিয়ায়, নাকি আগামী বছর হজ নিবন্ধনে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে—এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে মন্ত্রণালয় বিবিসিকে জানিয়েছে।
সোমবার সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, দেশটিতে বসবাসরত খুবই সীমিত সংখ্যক মানুষ এবার হজ পালনের সুবিধা পাবেন।প্রতি বছর হজ মৌসুমে আনুমানিক কুড়ি লাখের বেশি মানুষ হজ পালন করেন। এর আগে আশংকা করা হয়েছিল, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবার হজ বাতিল করতে পারে দেশটির কর্তৃপক্ষ। মুসলমানদের জন্য হজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সৌদি আরবে এ পর্যন্ত এক লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১,৩০৭ জন মানুষ মারা গেছেন। এর আগে সুরক্ষার জন্য মার্চের শুরুতে বিদেশি নাগরিকদের জন্য মক্কা ও মদিনায় ওমরাহ পালন ও ধর্মীয় সব কর্মকাণ্ড বন্ধের বিরল ঘোষণা দিয়েছিল সৌদি আরব। এর কয়েকদিন পর সৌদি নাগরিক ও বাসিন্দাদের জন্যেও ওমরাহ হজ সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়। মসজিদে নামাজ পড়া এমনকি ঈদের জামাতের উপরেও বিধিনিষেধ ছিল। একই সময়ে সকল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করে দেশটি। সেখানে বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি ছিল। সৌদি আরব মাত্র কয়েকদিন আগে দেশব্যাপী লকডাউন প্রত্যাহার করে।