১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সেই কালরাতে শহীদ হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিবারের ২৬ জন। ঘাতকের হাত থেকে রেহাই পাননি জাতির পিতার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও ছোট্ট শিশু শেখ রাসেলও।
বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রামে যিনি ছায়ার মতো পাশে থেকে মনোবল দিয়েছেন, সেই সাহসী নারী বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ঘাতকদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাননি বরং মাথা উঁচু করে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গী হয়ে চলে গেলেন দেশের তরে।
ঘাতকের বুলেট থেকে বঙ্গবন্ধুর তিন ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, শেখ জামাল ও নিষ্পাপ শিশুপুত্র শেখ রাসেলও রেহাই পাননি।
বঙ্গবন্ধুর নিজের পছন্দের পুত্রবধূ সুলতানা কামাল দেশের একজন খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ এবং আরেক পুত্রবধূ রোজী জামালও শহীদ হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের পায়ের সমস্যা নিয়েও মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। তার মতো শান্ত ও বিচক্ষণ প্রগতিশীল মানুষকেও ঘাতকরা হত্যা করেছে ওই রাতে।
বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তার জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা এসবি অফিসার সিদ্দিকুর রহমান, কর্নেল জামিল, সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককেও ধানমন্ডির বাড়িতে হত্যা করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর ভাগনে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মণির বাসায় হামলা চালিয়ে শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায় হামলা করে সেরনিয়াবাত ও তার কন্যা বেবী, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় বেন্টু খানকে হত্যা করে ঘাতকরা।
ঘাতকদের টার্গেট ছিল তারা বঙ্গবন্ধুসহ তার পুরো পরিবার ও নিকটাত্মীয় কাউকেই পৃথিবীতে জীবিত রাখবে না। সেই অনুযায়ী সেদিন ঘাতকরা ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে হত্যার এক জঘন্য উল্লাসে মেতে উঠেছিল। হত্যা করেছিল বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং নিকট আত্মীয়সহ মোট ২৬ জনকে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তখন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করার কারণে প্রাণে বেঁচে যান।