সীমান্ত হত্যা বন্ধে নতুন পরিকল্পনা নিয়েছি: বিএসএফ ডিজি

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক রাকেশ আস্তানা বলেছেন, দুই দেশের সীমান্তে হত্যা বন্ধে নতুন কিছু পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আমি বিএসএফ-এ যোগদান করার পর এসব পরিকল্পনা নিয়েছি। ভবিষ্যতে এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। আপনারা দেখুন, অপেক্ষা করুন। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিচ্ছি।

শনিবার সকালে ঢাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক (ডিজি) পর্যায়ের সম্মেলন শেষে এ কথা জানান রাকেশ আস্তানা।

তিনি বলেন, সীমান্তে রাত দশটা থেকে সকাল পাঁচটা পর্যন্ত অপরাধীদের বিচরণ থাকে। মূলত ওই সময়টায় অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলো বেশী ঘটে। এই ধরনের সীমান্ত হত্যা ঘটনা অনাকাঙ্খিত। তবে অপারাধীদের কোনো জাতি নেই।

আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে পানি দূষণ নিয়ে বিজিবি প্রধান বলেন, এটা আমাদের বিষয় না। এটা দুই দেশের মন্ত্রনালয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তারপরও বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। এবারের সম্মেলনেও সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি, হত্যা ও আহত না করার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।

এছাড়া সীমান্তের অপর প্রান্ত থেকে বাংলাদেশে ফেনসিডিল, গাঁজা, মদ, ইয়াবা, ভায়াগ্রা, সেনেগ্রা ট্যাবলেটসহ মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের চোরাচালান বন্ধ, অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাচার, বাংলাদেশি নাগরিকদের ধরে নিয়ে যাওয়া বা আটক, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম, বাংলাদেশে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ করানো, মানসিক ভারসাম্যহীন ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশইন, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে উন্নয়নমূলক নির্মাণ কাজ, উভয় দেশের সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ, বাংলাবান্ধা আইসিপিতে দর্শক গ্যালারি নির্মাণ, সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নে যৌথ টহল পরিচালনা, রিজিয়ন ও ফ্রন্টিয়ার পর্যায়ের অফিসারদের নিয়মিত বৈঠক আয়োজন, পার্বত্য অঞ্চলে হিল ফ্লাইং প্রশিক্ষণ, অপারেশন পরিচালনা এবং উভয় বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও বিরাজমান সৌহার্দ্য বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে এ সম্মেলন শুরু হয়। এতে বিজিবির মহাপরিচালক মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বিএসএফের তরফ থেকে অংশ নেয় রাকেশ আস্তানার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল। সীমান্ত হত্যা ও নির্যাতন শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বিজিবি-বিএসএফের সম্মতি ও যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এ সম্মেলন। আজ সকালে দুই বাহিনী প্রধান যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন।

বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও বিজিবি সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট স্টাফ অফিসার ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যৌথ নদী কমিশন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করেন। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ সদর দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছিলেন।