শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে এবারে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রায় ষোল লাখ শিক্ষার্থীর কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে আগামী ৯ই অগাস্ট।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুহাম্মদ জিয়াউল হক বলছেন সবকিছু বিবেচনা করে সব কার্যক্রম অনলাইনে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং আগামী ৯ই অগাস্ট শুরু হয়ে ভর্তি কার্যক্রম চলবে পনেরই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
যেভাবে আবেদন করা যাবে
কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করবেন। একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ দশটি কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।পরে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীর কলেজ চূড়ান্ত হবে।
পুরো প্রক্রিয়াটি বুয়েটের সহযোগিতায় সম্পন্ন করা হবে বলে বলছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান।তিনি জানান বোর্ডের একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট আছে ভর্তি কার্যক্রমের জন্য এবং কলেজগুলো এর সাথে পরিচিত।
নিয়মানুযায়ী বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণরা যে কোনো বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাবে। তবে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা উভয় বিভাগে ভর্তি হতে পারবে।
যেভাবে সম্পন্ন হবে ভর্তি প্রক্রিয়া?
বাংলাদেশের গ্রাম, ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সব জায়গায় এখন কলেজ আছে যেখানে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি করানো হয়। কিভাবে হবে এসব জায়গায় অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম?
জবাবে প্রফেসর মুহাম্মদ জিয়াউল হক বলছেন, “দেশের সব কলেজের সাথে বোর্ডের ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ আছে। প্রতিটি কলেজই অনলাইনে সংযুক্ত। তারাই শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করবে”।
প্রসঙ্গত দেশে প্রায় পনের হাজারের মতো প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর কার্যক্রম আছে।
মিস্টার হক বলছেন, “গত ৫ বছরে সার্বিক সকল ভর্তি কার্যক্রম আমরা অনলাইনে করার চর্চা করছি ফলে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হবেনা। ইন্টারনেট সব কলেজে আছে। যারা নিজেরা আবেদন করতে পারবেনা তারা কলেজে যোগাযোগ করলে তাদেরকে কলেজ সহায়তা করবে”।।
কিন্তু সব জায়গায় ইন্টারনেট সুবিধা আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন সব জায়গাতেই ইন্টারনেট সুবিধা আছে।
“কলেজের সাথে শিক্ষা বোর্ডের অফিসিয়াল কাজের যোগাযোগ এখন ইন্টারনেটভিত্তিক। তাছাড়া প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভর্তির সময় হেল্প ডেস্ক চালু করবে শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য,” বলছিলেন তিনি।
এবার সহজে আবেদনের সুযোগ মিলবে
বোর্ড-কর্তৃপক্ষ-বলছে-ভর্তির-জন্য-অনলাইনে-আবেদনের-ক্ষেত্রে-কলেজগুলো-সহায়তা-করবে
সাধারণ প্রতি বছর কলেজে ভর্তির তারিখ ঘোষণার পর দেশজুড়ে কলেজগুলোকে ঘিরে অসংখ্য ছোটো দোকান গড়ে উঠতে একটি বা দুটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার নিয়ে।
এসব ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের আবেদনে সহায়তা করতো।
আবার মফস্বল এলাকায় শিক্ষকরাও অনেক শিক্ষার্থীকে নিজের কলেজে ভর্তির জন্য আবেদনে সহায়তা করতেন।
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার আমানুল্লাহ কলেজের শিক্ষক নাসিমা বেগম বলছেন, এবার এসব দোকানে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে ভিড় না হয় সেটিও তাদের বিবেচনা করতে হবে।
“সামাজিক দূরত্ব ও সরকারি সব নির্দেশনার বিষয়গুলো বিবেচনা করেই এবারে ভর্তি কার্যক্রম হবে। আমাদের অধ্যক্ষ ২/১ দিনের মধ্যেই এগুলো চূড়ান্ত করবেন সবার সাথে আলোচনা করে,”বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
তিনি বলেন সবার অনলাইন সুবিধা নেই এটি সত্যি এবং এই মহামারি পরিস্থিতিতে কিভাবে তারা সহায়তা পেতে পারে সেগুলোও শিক্ষকরা ভাবছেন।
“আশা করি ৯ই অগাস্ট ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আগেই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে যাতে করে শিক্ষার্থীরা সহজেই কলেজে ভর্তি হতে পারে”।