বলা হয়ে থাকে যে, সুতা এবং কাপড় বোনার শিল্প ভারতবর্ষে এসেছিল মেসোপটেমিয়ান সভ্যতা থেকে। সিন্ধু উপত্যকার নারী-পুরুষ উভয়ের কাছেই সুতা বুনন বেশ পরিচিত ছিল।ভারতে সুতা প্রথম চাষ ও বুনন শুরু হয় খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে।ঐ সময় সুতায় যে রঙ ব্যবহার হতো, তা এখনো ব্যবহার করা হয়;যেমন- নীল গাছ বা হলুদ থেকে পাওয়া রং।আর রেশমী কাপড় বোনা শুরু হয় ২৪৫০-২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে।শাড়ির সর্বপ্রথম চিত্রায়ন পাওয়া যায় সিন্ধু প্রদেশের এক পুরোহিতের প্রস্তর মূর্তিতে।সিন্ধু উপত্যকার লোকেরা দীর্ঘ কাপড়ের টুকরা কোমরবন্ধ হিসেবে ব্যবহার করতো।সভ্যতার শুরুর ইতিহাস বলে কাপড় পরিধানের পদ্ধতি শুধু সিন্ধু সভ্যতা নয়, মিশর, সুমের ও আসিরিয়াতেও প্রচলিত ছিল।ঐসব শহরের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে যে মুদ্রা ও প্রস্তরমূর্তি পাওয়া গেছে, তা এই তথ্যই প্রমাণ করে।আর্যরা যখন প্রথম দক্ষিণ ভারতের নদী অববাহিকায় আসে, তখন তারা তাদের সাথে এই ‘বস্ত্র’বা ‘Vastra’ শব্দটা নিয়ে আসে।যদিও সংস্কৃত মতে এর অর্থ হলো কাপড় বা পোষাক, কিন্তু তারা তখন এই শব্দ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত চামড়ার পরিধান উপযোগী আচ্ছাদনই বোঝাতো।এখানে আসার পর স্থানীয় অধিবাসীদের থেকে তারা প্রথম সুতায় বোনা লম্বা কাপড় পরিধানের অভ্যাস শুরু করে।
‘মহাদেব জাতক’নামের উপাখ্যানে আছে “সাটকা পীলেত্বা আপনেতব্বা কারপ্পত্তা অহেংসু”এর বাংলা অর্থ দাড়ায় শাড়ি ভিজিয়া অপনয়ন করিবার যোগ্য হইল।‘শাড়ি’ শব্দটির উৎস-সময়কালকে। বলা হয়ে থাকে, ‘শাড়ি’ এসেছে সংস্কৃত শব্দ ‘শাটী’ থেকে। তবে অনেকের ধারণা, ‘শাটী’ শব্দটি সংস্কৃত হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেও আদতে এটা ধার করা। আর্যরা ভারতবর্ষে আসার আগেই নাকি ‘শাটী’ শব্দটির অস্তিত্ব ছিল।সেই হিসেবে বলা যেতেই পারে, শাড়ির ইতিহাস বোধ হয় সাড়ে তিন হাজার বছর কিংবা তারও বেশি পুরানো।মধ্যভারতীয় আর্য ভাষায় ‘শাড়ি’কে আরও বিভিন্ন শব্দে আখ্যায়িত করা হয়েছে, যেমন-‘সাটক’, ‘সাটিকা’। আবার ‘মহাভারত’য়ে উল্লিখিত দ্রৌপদীর যে ‘বস্ত্রহরণ’করা হয়েছিল, সেটাও অনুমিত হয়, শাড়িই ছিল।গুপ্ত যুগের (আনুমানিক ৩০০ থেকে ৫০০ সাল পর্যন্ত) বিখ্যাত কবি কালীদাসের ‘কুমারসম্ভব’য়ে শাড়ির কথা উল্লেখ আছে। গুপ্ত আমলের ইলোরা অজন্তা গুহার প্রাচীন চিত্রাবলি বলে দেয়, খ্রিস্টাব্দ শুরুর সময়ে শাড়ির অস্তিত্ব ছিল।ইলোরা অজন্তার মতো পাহাড়পুর-ময়নামতির পোড়ামাটির ফলক থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়, হাজার বছর আগে এই পূর্ববঙ্গে শাড়ির প্রচলন ছিল।
আর সি মজুমদার প্রাচীন ভারতের পোশাক সম্পর্কে বলেন, তখন মেয়েরা আংটি দুল হার এসবের সঙ্গে পায়ের গোছা পর্যন্ত শাড়ি পরেছে।ওপরে জড়ানো থাকত আধ্না (আধ খানা”)।পাহাড়পুরের কিছু স্থাপত্য দেখে তা অনুমান করা যায়।আনুমানিক ৭৫০ থেকে ১১৬২ পর্যন্ত এই চারশত বছর পাল রাজাদের স্থিতিকাল।এ হিসাবে অষ্টম শতাব্দীতেও শাড়ির উপস্থিতি সম্পর্কে নি:সংশয় হওয়া চলে।১৮৭৪ সালে রাজনারায়ণ বসু তার ‘সেকাল আর একাল’গ্রন্থে মন্তব্য করেছিলেন, ‘প্রত্যেক জাতিরই একটি নির্দিষ্ট পরিচ্ছদ আছে। সেইরূপ পরিচ্ছদ সেই জাতির সকল ব্যক্তিই পরিধান করিয়া থাকেন। কিন্তু আমাদিগের বাঙ্গালী জাতির একটি নির্দিষ্ট পরিচ্ছদ নাই। কোন মজলিসে যাউন, একশত প্রকার পরিচ্ছদ দেখিবেন, পরিচ্ছদের কিছুমাত্র সমানতা নাই। ইহাতে একবার বোধ হয়, আমাদের কিছুমাত্র জাতিত্ব নাই।’বাঙালির পোশাক নিয়ে একই রকম কথা কয়েক বছর পরে বিলেত থেকে ফিরে লিখলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়।১৮৮৫ সালে তিনি লিখলেন, ‘বাঙ্গালির পোষাক অতি আদিম ও আদমিক। বাঙ্গালীর কোন পোষাক নাই বলিলেও চলে।যদি জাতি, গুটিকতক সভ্য শিক্ষিত যুবকে না হয়, যদি জাতির আচার ব্যবহার ভদ্রতা শিক্ষা কেবল জগতের পঞ্চমাংশের স্বীকৃত না হয়, যদি অশিক্ষিত লক্ষ লক্ষ কৃষক ও ব্যবসায়ী জাতির মূল হয়;তাহা হইলে দুঃখের সহিত বলিতে হইবে, বাঙ্গালীর কোনই পোষাক নাই।’কথাগুলো শুনতে খারাপ লাগলেও খুব যে মিথ্যা নয়, সেটা অস্বীকারের উপায় নেই। বাঙালির পোশাকের এই দৈন্য প্রধানত পুরুষের পোশাকের ক্ষেত্রে। নারীর ক্ষেত্রে পোশাক হিসেবে ইতিহাসে শাড়ির ধারাবাহিকতা দেখা যায় এবং শাড়ি আজো জৌলুস নিয়েই দুনিয়াতে টিকে আছে।শাড়িই বোধহয় বাঙালির একমাত্র পোশাক যা ভারত এবং দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে নারীরা বেশ আগ্রহ নিয়ে পরে।১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা প্রবন্ধ ‘কোট বা চাপকান’-এ শাড়ির মাহাত্ম্য টের পাওয়া যায়,মলয় রায় তার ‘বাঙালির বেশবাস’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘সুকুমার সেনের বক্তব্য অনুসরণ করে আমাদের এই সিদ্ধান্তে আসতে হয়, ধুতি ও শাড়ির মধ্যে কোনো গুরুতর লিঙ্গভেদ সে-কালে মানা হত না।’ ধুতি এবং শাড়ির সমার্থক হওয়ার বিষয়টি কবিকঙ্কণ মুকুন্দরামের কাব্যে পাওয়া যায়। তিনি তাঁর কাব্যে সুরঙ্গ পাটের শাড়ি, তসরের শাড়ি, মেঘডম্বুর শাড়ি, ক্ষীরোদক শাড়ি, খুঞার ধুতি, খুঞার শাড়ি ও বিয়ে উপলক্ষে ব্যবহার্য মন্ত্রপূত হরিদ্রাযুত ধুতির উল্লেখ ছাড়াও বলেছেন- ‘তন্তুবায়ভুনি ধুতি খাদি বুনে গড়া’। ‘গড়া’ সর্বদা ব্যবহার্য মোটা কাপড় ও ‘খাদি’ খদ্দরের কাপড়। এসব বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, নারীর বস্ত্র হিসেবে ‘শাড়ি’ নামটি কালের বিবর্তনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, যদিও ধুতি নামটি তখনো একেবারে হারিয়ে যায়নি। পনেরো-ষোল শতকে বাংলার নারীরা শুধু একখণ্ড শাড়ি গায়ে জড়াতেন। তখনো শাড়ি ব্যতীত নারীর ঊর্ধ্বাঙ্গে কোনো বস্ত্রের প্রচলন হয়নি।
মূলত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে প্রথম শাড়ির প্রচলন শুরু হয়। তারা মনে করতো সেলাইকৃত বা জোড়া দেওয়া কাপড় অপবিত্র। আবার এরকম একটা ধারণাও তাদের মধ্যে প্রচলিত ছিল যে, নাভিমূলই জীবন ও সৃষ্টির উৎস এবং তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই শাড়িতে তা উন্মুক্ত রাখা হতো। সিন্ধু এলাকার মহিলাদের এই কটিবন্ধ তখন নাম পায় নিভি (Nivi)। মহিলাদের এই কটিবন্ধ ভারতবর্ষে বহুল প্রচলিত শাড়ির অগ্রদূত। সিন্ধু সভ্যতার পরের বিভিন্ন মহাকাব্য থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায় পরবর্তীতে কাঁচুকি (Kanchuki) নামে এক টুকরা কাপড় শরীরের উপরের অংশে জড়িয়ে পরার প্রচলন নারীদের মধ্যে ছিল যা থেকে ব্লাউজের প্রচলন শুরু হয়।
মধ্যযুগের কবিদের কাছ থেকে শুধু শাড়ির কথাই জানা যায় না, শাড়ির রঙের কথাও জানা যায়। চৌদ্দ শতকের কবি চণ্ডীদাস লিখেছেন, 'নীল শাড়ি মোহনকারী/উছলিতে দেখি পাশ'।প্রথম মা হওয়া নারীকে উপহার হিসেবে দেওয়া হতো লাল শাড়ি।শাড়ি পরার ক্ষেত্রে ধনী-গরিব বিভাজন ছিল। ধনীরা পরতেন মিহি মখমল কাপড়ের শাড়ি আর গরিবের শাড়ি ছিল সাধারণ সুতি।
মুসলমানরা আগমনের ফলে আরও অনেক কিছুর পাশাপাশি পোশাক-পরিচ্ছদেও লাগে পরিবর্তনের হাওয়া। তুর্কি-আফগান-মোগল সংস্কৃতির ধারা স্থানীয়রাও গ্রহণ করে।পাগড়ি, সালোয়ার-কামিজ ও পায়জামার মতো পোশাক জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও শাড়ির গুরুত্ব কিন্তু কমে যায়নি। দক্ষিণ ও পূর্ব ভারতের নারীরা শাড়িকেই নিজেদের পরিধানের প্রধান বস্ত্র হিসেবে আঁকড়ে ধরে থাকে।সম্ভবত মোগল আমলেই চালু হয় ব্লাউজ ও উর্ধ্বাঙ্গ ঢাকার রীতি। তবে তা উচ্চবিত্তদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।মাদাম বেলনোসের চিত্রে উনিশ শতকের প্রথমদিকে গ্রামবাংলার অন্তঃপুরের যে ছবি পাওয়া যায়, তাতে দেখা যায়, এক প্যাঁচেই শাড়ি পরেছেন বাংলার নারী। অধিকাংশ শাড়ির রংই সাদা। তবে পাড় হতো চিকন এবং লাল। সায়া-ব্লাউজ কিংবা অন্তর্বাসের চল ছিল না।
১৮৮৯ সালে ঢাকা জেলার একটি হিন্দু পরিবারের ওপর করা জরিপে দেখা যায়, একজন মহিলা বছরে পাঁচ-ছয়টি শাড়ি ব্যবহার করে থাকেন। এগুলোর পেছনে খরচ হতো ৪ রুপি। ফ্যানি পার্কস ১৮৫১ সালে তাঁর বইয়ে লিখেছেন, 'ধনী মহিলারাও শাড়ি পরত। শীতের সময় ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচার জন্য বাড়তি হিসেবে ব্যবহার করত চাদর।' তবে তখনো ব্লাউজ-সায়া-পেটিকোটের চল হয়নি, চালু করল কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল। ফুলহাতা ব্লাউজ এবং কুচিছাড়া শাড়িই ছিল সেই সময় উঁচু সমাজের নারীদের প্রধান ফ্যাশন। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শাড়ি আর ব্লাউজ নিয়ে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে; এবং ভবিষ্যতেও হতে থাকবে।
তবে শাড়ির কয়েক হাজার বছরের ইতিহাসে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে, তা বলা যাবে না। ভারতবর্ষে শাসক গোষ্ঠী পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নাটকীয়ভাবে বদলেছে পুরুষদের পোশাক কিন্তু শাড়িকে তার প্রধান পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে আঁকড়ে রেখেছে নারী। তাই বলা যেতেই পারে, শাড়ি আর ভারতীয় নারী একে অপরের পরিপূরক।মোগলদের মধ্যে সম্রাট আকবরই প্রথম ভারতবর্ষের সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা শুরু করেন। ভারতীয় নারীদের নিজের স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মোগল সংস্কৃতির সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতির মেলবন্ধন। সেই ধারাবাহিকতায়ই মোগলাই আভিজাত্যে যোগ হল শাড়ি।
নানা রকম দামি পাথর ছাড়াও সোনা-রূপার সুতা দিয়ে শাড়িতে নকশার কাজ করা হতো। মোগলদের আগ্রহের জন্য মসলিনের শাড়ির উপস্থিতিও থাকত জেনানা মহলে। মোগলদের জন্য মসলিন কাপড় সংগ্রহের জন্য সরকারি লোক নিয়োগ দেওয়া হতো।জমিদারি আমল মোগলদের বাংলা জয়ের পর 'জমিদার' একটি বিশেষ পদবি হিসেবে স্বীকৃতি পায়। জমিদার মানেই বিশাল সম্পত্তির মালিক। স্বাভাবিকভাবেই সেই সময়ে ধনিক শ্রেণী হিসেবে 'জমিদার' গোষ্ঠীর আত্দপ্রকাশ ঘটে। তাদের সময়ে শাড়ি পরা হতো এক প্যাঁচে। ব্লাউজও এ সময়ে শাড়ির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে আবির্ভূত হয়। বিশেষ করে ঠাকুর পরিবারের মেয়েরা ব্লাউজকে সাধারণের কাছে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখেন।ষাটের দশক
ষাটের দশকের শেষ থেকে সত্তরে প্রথম দিকে হিপ্পীদর স্লোগান ছিল 'ফুলের শক্তি'। সমসাময়িক সময়ে চলা ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদ আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে 'ফুল'। পোশাকের নকশাতেও থাকত ফুলের প্রাধান্য, এমনকি সাজসজ্জায়ও। পরে এ ফ্যাশনে নতুন মাত্রা আনে হিন্দি সিনেমার বহুল প্রচলিত 'মিনি শাড়ি'। বিশেষ করে বলা যেতে পারে 'সত্যম শিবম সুন্দরম' সিনেমাতে জিনাত আমানের পরা শাড়ির কথা। মিনি শাড়ির পাশাপাশি 'টেডি শাড়ি'র কথাও বলা যায়, যা অভিনেত্রী মমতাজ জনপ্রিয় করেছিলেন। শাড়ির সঙ্গে সঙ্গে ব্লাউজেও লাগে পরিবর্তনের হাওয়া। ব্লাউজের গলা করা হয় অনেকটা নৌকার আদলে এবং ব্লাউজের পেছনের দিকটা আটকানোর জন্য থাকত মেগি ক্যাপের বোতামভিক্টোরীয় যুগ
উনিশ শতকের চলি্লশ দশক থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কে বলা হয়ে থাকে 'ভিক্টোরিয়ান যুগ'। এ যুগে ফ্যাশনের মূল কথাই ছিল কাপড়ে সারা শরীর ঢাকা থাকতে হবে। এমনকি গোড়ালি দেখানোটাও অসম্মানকর হিসেবে বিবেচিত হতো। ভারতের সেই গরমেও ইংরেজরা ভিক্টোরিয়ান ফ্যাশনের পোশাক পরতে পিছপা হননি। ব্রিটিশদের সংস্পর্শে থাকা জমিদার ও স্থানীয় ধনীদের পোশাক-পরিচ্ছদেও যোগ হয় ভিক্টোরিয়ান ফ্যাশনের স্টাইল। এ সময়ে শাড়ির সঙ্গে ফুলহাতা ব্লাউজ এবং পেটিকোট পরার চল শুরু হয়। এই রীতিতে শাড়ি পরাটা বাঙালি নারীর চিরায়ত এক প্যাঁচে শাড়ি পরার ধারণাকে সম্পূর্ণ পাল্টে দেয়।
১৯৪০-৫০ দশক ব্রিটিশমুক্ত ভারতে ১৯৪০ দশকের শেষের দিক থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল হিন্দি চলচ্চিত্রের 'সোনালি সময়'। এসব চলচ্চিত্রের নায়িকারা ছিলেন তখনকার ফ্যাশন আইকন।১৯০৯ সালে এই যে বলিউডের যাত্রা শুরু, তার চলচ্চিত্র শিল্প সমৃদ্ধ হয়ে উঠল আরো বছর কুড়ি পরে, ১৯৩০ সাল নাগাদ। কেমন ছিল ১৯৩০ সালের নায়িকাদের পোশাক? তখনকার সাদাকালো সিনেমায় একবার ফিরে তাকালে আমরা দেখতে পাই সেইসময়ের বিখ্যাত দুই নায়িকা দেবিকারানি ও কাননদেবীকে। শুধু বলিউড নয়, কলকাতার মেয়ে কাননদেবী সমানে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন বাংলা সিনেমার এই দুই বিখ্যাত সুন্দরী নায়িকার সঙ্গে আরেক গায়িকা-অভিনেত্রী যমুনা বড়ুয়ার নামও করতেই হয়। পর্দায় তাঁদের সাজ ছিল একেবারেই সাদামাটা। চুলে পাতা কেটে সিঁথি করে পরিপাটি করে চেপে চুল আঁচড়ানো, অবাধ্য চুল কানের পাশ থেকে প্রায় উঁকি মারে না। নায়িকারা সবাই শাড়ি পরতেন। কাননদেবী- যমুনা বড়ুয়ার ব্লাউজের গলায় অনেক সময়েই ছোটো-বড় কুঁচি দেওয়া থাকত। সামান্য ঢিলা হাতার ব্লাউজের উপরদিয়ে ভালো করে শাড়ি জড়ানো। খুব ঢেকেঢুকে শাড়ি পরড় এই ধরনটা বিশেষভাবে চোখে পড়ে। অনেকসময়েই দেখা যায় আঁচলটাকেও আবার গলার উপর দিয়ে ফিরিয়ে এনে গায়ে ঢাকা দেওয়া হয়েছে, এমনকী মাথার খোঁপার উপরেও আলগা ঘোমটা দিতে দেখা যেত নায়িকাদেরও! গয়নাগাটির তেমন বাহুল্য খুব বেশী দেখা যেত না।সত্তরের সময় থেকে রেখা, হেমা মালিনী, জয়া বচ্চন, তনুজা শাড়ি-সালওয়ার-ট্রাউজার ছাড়াও স্কার্ট বা ড্রেসে পর্দায় আসতে থাকলেন। ছিলেন স্লিভলেস ব্লাউজের আশা পারখ, মিনিস্কার্টের জিনাত আমন।
১৯৪০ নাগাদ পোশাক হয়ে উঠল দৃষ্টিনন্দন, এতদিন কোনওরকমে শাড়ি জড়িয়ে মুড়ে রাখার যে ব্যাপার ছিল তার থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক ভঙ্গীতে শাড়ি পরলেন নায়িকারা। গলায় হাতে কুঁচি দেওয়া ব্লাউজের বদলে চৌকো গলা ছোটো হাতা ব্লাউজ পরতে লাগলেন নায়িকারা। ’৪০-র নূরজাহান বা ’৫০-র শ্যামা, নার্গিস, সুরাইয়াকে দেখা গেল শিফন শাড়িতে। এই স্মার্ট-শাড়ি ব্লাউজের নায়িকারা আঁচল ঘোমটা করে না পরে হাওয়ায় আঁচল ওড়াতেও দ্বিধা করেন না। ম্যাচিং শাড়ি-ব্লাউজের সঙ্গে কানে ঝোলা দুলও ছিল অ্যাকসেসরি। ’৬০ সালের আগেপরে থেকে নায়িকারা অনায়াসে সালওয়ার-কামিজ পরতে থাকলেন। নূতন-সায়রা বানু-বৈজয়ন্তী মালার পোশাক বৈচিত্র্যে সেজে উঠল। স্কিনফিটেড স্লিভলেস কামিজ ও টাইট চুড়িদার খুব পরিচিত পোশাক হয়ে উঠল। তবে নূতনের গলাবন্ধ ব্লাউজ, বৈজয়ন্তীমালা বা মীনাকুমারীর ঘাঘরা-চোলিও কম যায়না। এইসময় থেকে নায়িকারা এক্সপোজ করার ব্যাপারে রক্ষণশীলতা কাটিয়ে উঠলেন। মীনাকুমারী বা মালা সিনহাকে আংশিক এক্সপোজড শাড়ি বা ব্লাউজে দেখা গেল। এরপর অর্থাৎ ’৬০-র পর থেকে লম্বাঝুল টপের সঙ্গে স্কিনফিটেড স্ল্যাক্সও পরতে থাকলেন সায়রা বানু থেকে শর্মিলা ঠাকুর সবাই। চুল টেনে বুফোঁ খোঁপা এবং স্লিভলেস ব্লাউজে সাহসী শাড়ি আর সানগ্লাস ছিল এইসময়ের নায়িকাদের চলতি ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। এমনকী নাচের দৃশ্যে ওড়না ছাড়াই ঘাঘরা চোলিতেও সাহসী হয়ে উঠতে লাগলেন অভিনেত্রীরা।
দীর্ঘ সংগ্রামের পর বাংলাদেশ ১৯৭১-এ স্বাধীন এক দেশ হিসেবে আত্দপ্রকাশ করে। বাংলাদেশিরা নিজেদের সব কিছুর মধ্যে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা শুরু করে। তাদের পছন্দের শাড়ির মধ্যে জায়গা করে নেয় দেশি খাদি এবং তাঁতের শাড়ি। আর এসব শাড়ির সঙ্গে চুলের সাজও ছিল আলাদা, করা হতো লম্বা বেণি কিংবা খোঁপা। ফুল দিয়েই সারা হতো খোঁপা অলঙ্কৃত করার কাজ। সে সময় আমরা পোশাকে অনুকরণীয় হিসেবে পেয়েছিলাম কবরী, শাবানা এবং ববিতার মতো অভিনেত্রী।আন্তর্জাতিক সংগীতে একদিকে তখন ডায়ানা রসের ডিস্কো এবং অন্যদিকে বি জিসের জনপ্রিয় গান। এসবের সঙ্গে যোগ হওয়া ঝলমলে, জমকালো এবং চকচকে পোশাক পরার রীতি এ সময়ের শাড়ির ধরন ঠিক করে দেয়। ঠিক তখনই দৃশ্যপটে আসে হিন্দি চলচ্চিত্র 'সিলসিলা'য় অভিনেত্রী রেখার পরা 'সিলসিলা' শাড়ি। ঘন রঙের এই শাড়ির সঙ্গে পরা হতো হাতাবিহীন কিংবা হোল্টার গলার ব্লাউজ। আর সাজসজ্জার অনুষঙ্গ হিসেবে থাকত সুরমা, গাঢ় রঙের লিপস্টিক আর চিকন ভ্রূ।এ সময়ে শাড়ির সঙ্গে মিল করে কেশবিন্যাস নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে।অনেকে পছন্দ করেছেন রেখার মতো চুলকে লম্বা করে ছেড়ে দিতে আবার কেউবা অভিনেত্রী ফারাহ ফসেটের মতো ঢেউ খেলানো চুলই পছন্দ করেছেন। নব্বইয়ের দশক এ দশকে এসে মনে হলো বাংলাদেশ ফ্যাশন ডিস্কোর অনেক গ্ল্যামার এবং চাকচিক্য দেখেছে। এবার নিজের স্বরূপ চেনার সময় এসেছে। ব্লক প্রিন্ট, নকশিকাঁথা, জামদানী, এবং টাঙ্গাইল সিল্ক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশী নারীদের কাছে। পাশাপাশি মিরপুর কাতান শাড়িও বিয়ের শাড়ি হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এ যেন নিজের হারানো ঐতিহ্যকেই পুনঃআবিস্কার। বিখ্যাত মসলিনের সঙ্গে প্রাচীন বাংলার কাপড় বুননের রীতির সংমিশ্রণে গড়ে ওঠে এই জামদানি। জামদানির নকশা মূলত জ্যামিতিক। এতে লতাপাতা এবং ফুলের উপস্থিতি থাকে পূর্ণমাত্রায়। বলা হয়ে থাকে এই ধারা এসেছে ইরানী এবং মোগলদের কাছ থেকে। সাধারণত অভিজাতরাই এ শাড়ি পরে থাকতো।
পরবর্তীতে ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ব্লাউজের ব্যবহার শুরু হয় এবং আধুনিক জ্ঞানদানন্দিনী দেবী ভারতে ব্লাউজের প্রথা চালু করেন এবং শাড়ী পরার আরেকটি অনুষঙ্গ পেটিকোটের প্রচলন শুরু হয় মুসলমানদের আগমনের সাথে, তারাই ঘাগরা/ পেটিকোট পোশাকের ব্যবহার শুরু করে ভারতবর্ষে এবং শাড়ীতে সেলাইয়ের ব্যপারটি তারাই আরম্ভ করেন। পূর্বে কাপড়ে সেলাইয়ের প্রথাতো ছিলই না বরং কাপড়ে সেলাই কে অপবিত্র মনে করা হত। এভাবেই বিভিন্ন পথ অতিক্রম করে আজকের শাড়ী তার নিজ রূপ ধারন করেছে।
বাঙালি নারী সুতি শাড়িতে অদ্বিতীয়া৷ ফলে কালের আবর্তে নানা ফেব্রিকের সংযোজন বিয়োজন ঘটলেও সুতি শাড়ির আবেদন এক চুলও কমেনি বরং উত্তোরত্তর এর কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সুতি উত্পাদিত হয় পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলায়৷ এছাড়া ঢাকা এবং কুমিলস্নাতেও স্বল্প পরিমাণ সুতি কাপড় তৈরি হয়৷ তবে সুতি শাড়ির কথা উঠলেই টাঙ্গাইলের শাড়ির কথা চলে আসে৷ টাঙ্গাইলের পাথরাইল, বিষ্ণুপুর, দেলদুয়ার, বাজিতপুর প্রভৃতি জায়গা জুড়ে রয়েছে বিরাট তাঁত অঞ্চল৷ সুতি কাপড় তৈরির জন্য রয়েছে বিভিন্ন রকমের তাঁত৷ যার মধ্যে পাওয়ার লুম, পিট লুক, জামদানী, চিত্তরঞ্জন ইত্যাদি তাঁত উলেস্নখযোগ্য৷ সীসা দিয়ে ঝোলানো সারি সারি সুতা সাজিয়ে পা দিয়ে তাঁত চালিয়ে ডিজাইন অনুসারে সুতা উঠানামা করা হয়৷ এক প্রস্থ সুতা থাকে উপরের দিকে আরেক প্রস্থ নীচের দিকে৷ এ দুই সারি সুতার মাঝখানে দিয়ে মাকু চালিয়ে ভরে দেয়া হয়৷ বিভিন্ন রঙের সুতা দিয়ে এভাবেই সুতি শাড়ি তৈরি হয়৷ ডিজাইন ভেদে আড়াই হাত প্রস্থ আর বারো হাত দৈর্ঘ্যের একটি শাড়ি তৈরি করতে সময় লাগে ১ থেকে ১০ দিন৷ সুতি শাড়ির উপর বস্নক, বাটিক, জল ছাপ, হালকা অ্যামব্রয়ডারির পাশাপাশি হ্যান্ডপেইন্ট, অ্যাপিস্নক, সিকোয়েন্স প্রভৃতি ডিজাইনও বেশ জনপ্রিয়৷
ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হিসেবে জামদানি শাড়ির অবস্থান সবার উপরে৷ মোঘল আমলে জামদানি উত্কর্ষতার চরম শিখরে পৌঁছে যায়৷ ঐ সময়টিতে পুরম্নষ-মহিলা উভয়ের পোশাকেই জামদানির ডিজাইন পরিলৰিত হয়৷ সে সময়ের ইউরোপিয়ান চিত্রকলার দরবার ভার্সিলি এবং লন্ডনের মহিলাদের পোশাকে জামদানি গজ কাপড়ের ব্যবহার দেখা যায়৷ পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতেও রাজ দরবারে জামদানি ব্যবহৃত হত৷ জামদানি তৈরিতে কারিগরী দৰতার চেয়ে ডিজাইনিং-এ সৃজনশীলতা ও শৈল্পিক দৰতাটা জরম্নরি৷ জামদানির আবেদন এখনো অমলিন৷ এর পেছনে জামদানির ডিজাইনে জ্যামিতিক প্যাটার্নের ধারাবাহিকতা ও বুননের বিষয়টিই ঘুরে-ফিরে প্রাধান্য পায়৷ ঢাকার রূপগঞ্জ, সোনারগাঁও এবং সিদ্ধিরগঞ্জের প্রায় ১৫০টি গ্রামে এ শিল্প টিকে আছে৷ জামদানির পাড় ও আঁচলের নানা নকশার মধ্যে কলকা, আংটি, শামুক, ময়ূর পেখম, তাজেল, কাজল লতা, সন্দেশ, পানকী, পানপাতা প্রভৃতি উলেস্নখযোগ্য৷ জামদানীর জমিনের নকশা বুটা, জাল ও তেছরি এ তিন ভাগে বিভক্ত৷ জমিনের নকশার মধ্যে হাজার তারা, মটর দানা, নয়ন সুখ, ময়ূর জোড়া, কদম বাহার, জীবন তারা, সঙ্খমতি, কলসী ফুল, গজ মতি প্রভৃতি উলেস্নখযোগ্য৷
সুতি, জামদানির মতো অদ্বিতীয় এক শাড়ির নাম কাতান৷ বেনারসির আরেকটি ধরন বলা যেতে পারে কাতানকে৷ এক সময় বিভিন্ন উত্সব-পার্বণে নারীদের প্রথম পছন্দই ছিল কাতান৷ হালকা কাজের দেশি কাতানের ছিল ব্যাপক চাহিদা৷ বর্তমানে কাতানের চাহিদা খানিকটা পড়তির দিকে হলেও নিজেদের সংরৰণে বাহারী কাতান রাখতে পছন্দ করেন এমন নারীর সংখ্যাই বেশি৷ কাতানের ডিজাইনিং এ চিকন পাড় ও শাড়ি জুড়ে কলকা বিশিষ্ট মোটিভের চলই এখন বেশি৷ মিরপুরের কাতানের বাইরেও টাঙ্গাইলের তাঁতিরা তৈরি করছে ফুল সিল্ক টাঙ্গাইল কাতান, এছাড়া বালুচুরি, গাদোয়ান শাড়িও চল রয়েছে৷ চিকন পাড় ও পেটানো কাজের আঁচল বিশিষ্ট কাতান শাড়িও জনপ্রিয়৷ লাল-কালো, মেরম্নন, কমলা, ফিরোজা, পেঁয়াজ রঙগুলোই কাতানে ঘুরে ফিরে দেখা যায়৷ এক রঙা কাতানে চওড়া ও চিকন পাড়ের জনপ্রিয়তা এখন বেশি হলেও ভেতরে কারম্ন-কার্যময় শাড়ির জনপ্রিয়তাও রয়েছে৷ কাতান শাড়ির মূল ৰেত্রটি মিরপুর ১০ নম্বরের বেনারসি পলস্নী৷ এছাড়া কাতান শাড়ি কিনতে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন টাঙ্গাইলে৷
শাড়ী শুধুমাত্র বাংলাদেশের পোশাক নয়, এটি উপমহাদেশ সহ এশিয়া মহাদেশের একটি জনপ্রিয় পোশাক যার প্রমাণ নেপালি নারীদের পোশাক পরিচ্ছদ। নেপালি নারীরাও বিভিন্ন ধরনের শাড়ী পরে, এর মাঝে “হাকুপাতাসি” উল্লেখযোগ্য। এটি লাল পাড়ের কাল শাড়ী।ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় বাঁধনি,বেনারসি,তাঁত,জামদানি,শালু পরিচিত। দক্ষিনাঞ্চলীয় গাড়োয়ান, কাঞ্চিপুরম, মাইসোর,বলরামপুর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
পূর্বাঞ্চলে শাড়ী কাথা, বালুচরি ব্যবহার করা হয়।মধ্যাঞ্চলীয় শাড়ীর মাঝে চান্দেরি পাইথানি উল্লেখযোগ্য। স্রীলংকায় প্রধানত ভারতীয় শাড়ী পরা হয়ে থাকে যা সাধারন ভাবে কানাড়িয় বা ওয়াসারিয়া নামে পরিচিত।এছাড়া ক্যান্ডির পাহাড়ি এলাকায় ক্যান্ডির ধরন প্রচলিত।
শাড়ীর যত্নাদি:
১) স্টিলের আলমারিতে যেন মরিচা না পড়ে তাতে শাড়ী নষ্ট হয়।২ )জর্জেট ও শিফন শাড়ী ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন, চিপবেন না, ও শাড়ী রোল করে রাখুন, এবং অবশ্যই এই শাড়ীগুলোতে নিম পাতা বা কালো জিরা দিয়ে রাখুন।৩) শাড়ী সঠিক নিয়মে ধুবেন। ৪) কাপড় রাখার স্থানটি শুকনো হওয়া আবশ্যক,নতুবা ছত্রাক সংক্রমনের ভয় থাকে।৫)আলমারি বা ট্রাংক যেখানেই শাড়ী রাখুন না কেন, তা যেন ফুটো না হয় নতুবা তেলাপোকা/ইদুরে কাটতে পারে শাড়ী।৬ )বাইরে থেকে এসে কিছুক্ষন বাতাসে রেখে শাড়ীর ঘাম শুকিয়ে নিন, নতুবা দাগ পড়তে পারে।৭) ব্যবহৃত শাড়ী ৩ মাস অন্তর ও অব্যবহৃত শাড়ী ৬ মাস অন্তর বের করে ধুতে হবে।৮) কাঠের আলমারি তে শাড়ী রাখলে তা মাঝে খেয়াল করতে হবে আলমারি ঘুণে ধরেছে কিনা, নতুবা শাড়ী কেটে যেতে পারে।৯ )শাড়ী রাখার আলমারি শাড়ী রাখার পূর্বে অবশ্যই ঝেড়ে মুছে নিবেন।১০) সূতি শাড়ী ইস্ত্রি করে কিছুক্ষন বাতাসে রেখে তুলে রাখুন, অনেকদিনের জন্য রাখতে হলে মার এড়িয়ে যান।১১ )শাড়ীর ভাঁজে ন্যাপথলিন,কালোজিরা,নিমপাতা ইত্যাদি দিয়ে রাখুন, এতে পোকায় কাটবে না।১২) মসলিন বা কাতান শাড়ীর ক্ষেত্রে অবশ্যই সাদা কাগজ ব্যবহার করবেন এবং ড্রাই ওয়াস করানোই ভালো।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত