শহিদ পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে: জামায়াত আমির

এক আইনজীবী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শহিদদের আমরা দলীয় সম্পদ বানাতে চাই না। শহিদরা সবার, জাতির। শহিদরা আমাদের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। তাদের টাকা দিয়ে মাপা যাবে না। শহিদদের প্রতি ফোটা রক্তের দাম অকল্পনীয়।

তবে তাদের সম্মানজনক সাহায্য করতে হবে বলেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, প্রতিটি পরিবার থেকে একজন করে সরকারি চাকরি দিতে হবে। এটা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। অন্তর্বর্তী সরকারকে এই কাজ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আইডিইবি কাউন্সিল হলে ঢাকা মহনগর দক্ষিণ জামায়াত আয়োজিত এক আইনজীবী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সংস্কারের কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা সুন্দর হবে। ভোটের আগে সংস্কার কাজগুলো সম্পন্ন হলেই কেবল নির্বাচনী রোডম্যাপ সফল হবে।

জামায়াতের আমির বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারে ব্যর্থ হলে নির্বাচনের রোডম্যাপও ব্যর্থ হবে। আগে রাষ্ট্র সংস্কার, পরে নির্বাচন। এই সরকার কোন কোন সংস্কার করতে চায়, সেগুলোর তালিকা তৈরি করে কতদিনের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে তার রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। এজন্য দ্রুত নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কারের রোডম্যাপের জন্য সংলাপ করতে হবে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাষ্ট্রীয় কোনো দায়িত্বে থাকার অধিকার নেই। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিবাদের সহযোগীরা এখনো আছেন। তাদের দ্রুত অপসারণ করতে হবে। দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যারা গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে আইনজীবীদের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আইন হাতে তুলে নিতে চাই না। প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতিও চাই না। তবে আমরা চাই, সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হোক।

তিনি বলেন, হত্যা ও গুমের মাস্টার মাইন্ডরা যদি পার পেয়ে যায়, তাহলে কিছুদিন পর পর এদেশে গণঅভ্যুত্থানের প্রয়োজন হবে। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি, এটি যেন বাংলাদেশের শেষ গণঅভ্যুত্থান হয়।

তিনি আরো বলেন, ক্ষমতাসীনরা বড়াই করে বলতো, আমরা বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছি। অথচ এখন প্রকৃত বাংলাদেশের অবস্থা দেখেন, প্রত্যেকটি ব্যাংক ফোঁকলা এবং ধ্বংস করা হয়েছে। বিচারকদের মধ্যে রাজনীতি প্রবেশ করিয়ে বিচার ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করা হয়েছে।

জামায়াতের আমির বলেন, সব দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাই বলে নির্দোষকে মামলা দিয়ে হয়রানির পক্ষে জামায়াতে ইসলামী না। এ ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।

এতে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।