লালমোহনে মিথ্যে অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা, প্রতিবাদে মানববন্ধন

ভোলার লালমোহন উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে লালমোহন থানার সামনে বিদ্যালয়টির শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের বাহাদুর চৌমুহনী এলাকার আজিজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের ছাদে নিয়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের হয় লালমোহন থানায়।

এই মামলা মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, এলাকাবাসী ও অভিভাবকগণও এই মামলাকে মিথ্যা, বানোয়াট এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলে আখ্যায়িত করেন। শুক্রবার বিকেলে এ মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে লালমোহন থানার সামনে সমবেত হয়ে মানববন্ধন করেন তারা।

এ সময় বিদ্যালয়ের দাতা পরিবারের সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা মারুফ বাহাদুর বলেন, আমরা প্রধান শিক্ষককে চিনি। তিনি একজন ধার্মিক লোক। তিনি এলাকায় প্রশসংসা অর্জন করেছেন। যে অভিভাবক এই মামলা দিয়েছেন তিনি প্রথমে আমার কাছে এসেছিলেন।

তখন বলেছিলেন স্যার তার মেয়েকে বিদ্যালয়ে ঝাড়ু দিতে দেরি হওয়ায় থাপ্পর মেরেছে। পরবর্তীতে ওই ছাত্রীকে থানায় নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত রেখে কিভাবে মামলা হয় তা আমার জানা নেই। আমার কাছে মনে হচ্ছে এ ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলক। ওই শিক্ষকের মানহানীর জন্যই এমন অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে।
ঘটনার দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকা ও মানববন্ধনে অংশ নেয়া সহকারী শিক্ষক নুরুল্লাহ ও রহিমা বেগম জানান, আমাদের প্রধান শিক্ষক একজন ভালো মানুষ। তার বিরুদ্ধে এই ঘটনা সাজানো হয়েছে। কারণ আমরা দীর্ঘদিন ধরে তার সহকর্মী হিসেবে কাজ করছি।

কখনোই তারমধ্যে এমন কোনো কিছু লক্ষ্য হয়নি। তাই হঠাৎ আমাদের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ষড়যন্ত্রের অংশ। আমরা তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা জেনে দ্রুত সময়ের মধ্যে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

আজিজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান বলেন, বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার কিছু বখাটের ষড়যন্ত্রে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে ও মানহানীর উদ্দেশ্যে এ মামলা দায়ের হয়েছে। এরা বিদ্যালয়ের ওয়াইফাইয়ের পাসওয়ার্ড চাইতো।

এছাড়া গত বছর ঘূর্ণিঝড়ের সময় বিদ্যালয়ের সোলার প্যানেল থেকে মোবাইল ফোন চার্জ দিতে চাবি চেয়েছিল। তখন তাদের চাবি না দেওয়ায় এবং ওয়াইফাইয়ের পাসওয়ার্ড না দেওয়ায় অনেক আগে থেকেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে। যার কারণে ২৬ মার্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানের জন্য কক্ষ পরিস্কার করতে দেরি হওয়ায় ওই ছাত্রীকে থাপ্পর মেরেছিলাম। এ ঘটনাকে পুঁজি করে আমার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা এই অভিযোগ সাজানো হয়েছে।

এ বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার শিকার ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। ছাত্রীকে ভোলা বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হলে সেখানেও জবানবন্দী দেয় সে। তবে আমরা এ ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত রেখেছি।