ভোলার লালমোহনে কাউন্সিলরকে পুলিশের মারপিটের প্রতিবাদ

আব্দুর রহমান নোমান: লালমোহনে গভীর রাতে পৌরসভার ১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজ মাতব্বর ও মহিলাদেরকে পুলিশের মারপিটের ঘটনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী কাউন্সিলরসহ নির্যাতিত মহিলারা ও এলাকার জনগণ।

সোমবার সন্ধ্যায় পৌর ১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজ মাতব্বর সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ২৩ আগস্ট রবিবার গভীর রাতে লালমোহন থানার পুলিশ আমার এলাকায় এসে ঘুমন্ত লোকজন জাগিয়ে একের পর এক মারপিট করতে থাকে। এক পর্যায়ে কিছু লোক আমার কাছে আসে। আমাকে তারা ঘুম থেকে জাগিয়ে পুলিশের নির্যাতনের কথা জানায় এবং আমাকে তারা এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে পুলিশের সাথে কথা বলার জন্য ডেকে নেয়। আমি গিয়ে দেখি মহিলা পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। অথচ পুরুষ পুলিশেরা ঘরে ঢুকে মহিলাদের মারধর করছে এবং টানাটানি করছে। তখন আমি তাদের বললাম, আমি এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজ মাতব্বর। আপনারা মহিলাদের মারছেন কেন? এসব নিদোষী লোকজনকে মারছেন কেন? তখন পুলিশ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাকে চড়থাপ্পড় মারে, মারপিট করে। দারোগা শওকাত জামিলসহ কয়েকজন পুলিশ আমাদেরকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গাড়িতে তোলে এবং থানায় নিয়ে যায়।

তিনি নির্যাতনের কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। নির্যাতনের শিকার বাদশা মিয়া, অলি মিয়া ও কামালসহ কয়েকজন মহিলা অভিযোগ করেন।

কাউন্সিলর সিরাজ মাতব্বর আরো বলেন, আমার ভাই মিরাজ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। আমি তাকে দুইবার পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছি। আমরা পরিবারের সবাই তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। রবিবার সন্ধ্যায় মিরাজকে ধরার জন্য ডিবি পুলিশ আসে। মিরাজ ও তার সহযোগীদের সাথে ডিবি পুলিশের মারপিটের ঘটনা ঘটে। একজন ডিবি পুলিশ এতে রক্তাক্ত জখম ও আহত হয়। তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডিবি পুলিশের সাথের এই ঘটনা আমাকে কেউ জানায়নি। প্রশাসন ও এলাকার কেউ আমাকে এ বিষয়ে কিছু বলেনি। আমি ব্যবসায়িক কাজে বাজারে আমার আড়তে ছিলাম। পরে বাড়িতে এসে রাতে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ি। পুলিশ রাতে এসে আমাকেসহ নিদোষী ১৬/১৭জন পুরুষ ও মহিলাদের মারপিট করে থানায় নিয়ে যায়। পরে ওসি সাহেব আমাকেসহ কয়েকজনকে বাসায় পাঠিয়ে দেন। আমি অপরাধীর বিচার দাবী করি। নিদোষী কেউ যেন আসামি না হয়। অপরাধী যেই হোক আমি তার শান্তি চাই।

কাউন্সিলরের উপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে পৌরসভার মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন ও পৌরসভার সকল কাউন্সিলরগণ সোমবার সন্ধ্যায় এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে জেলা পুলিশ সুপারকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান। তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

রোববারের ঘটনায় ডিবি পুলিশের এসআই শংকর বাদী হয়ে এজাহার নামীয় ৬ জনকে চিহ্নিত করে ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে লালমোহন থানায় মামলা দায়ের করেন।

কাউন্সিলর সিরাজ মাতব্বরকে মারপিট প্রসঙ্গে লালমোহন থানার ওসি মীর খায়রুল কবির বলেন, সেরকম কিছু হলে আমরা ব্যবস্থা নেব। পুলিশ এজাহার নামীয় আসামি ধরতে গেছে। আমরা কাউন্সিলরের সহযোগিতা কামনা করি। কিন্তু তিনি পুলিশের কাজে বাধা প্রদান করেন। পরে পুলিশ ওনাকেসহ কয়েকজনকে থানায় নিয়ে আসে। এজাহারভুক্ত একজন ও অজ্ঞাতনামা একজন রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তার ভাই মিরাজকে ধরতে গেলে একজন ডিবি পুলিশের ওপর হামলা হয় এবং সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।