‘র‌্যাব দিয়ে অপারেশন ক্লিন হার্ট চালিয়ে খালেদা ভুল করেছিলেন’

এলিট ফোর্স ‘র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)’ দিয়ে ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’ চালিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ভুল করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ‘কাশ্মীর ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে দুইটি ভুল করেছিলেন। একটি ছিল- র‌্যাব (র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন) দিয়ে ক্লিন হার্ট অপারেশন। আরেকটি ছিল- সালমানকে (সালমান এফ রহমান) দিয়ে ওষুধের দাম বাড়ানো।’

‘বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসতে চায় তাহলে তাদের পরিস্কারভাবে বলতে হবে যে, তারা র‌্যাব বিলোপ করবে এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করবে। কারণ, এই দুইটা জিনিসের ভয়ে মানুষ মুখ খোলে না’- বলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি যে দশ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে, সেগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে দশ জনের নাম প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠাবেন, তা আগেই জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। জনগণকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দিন। সার্চ কমিটি যতই সার্চ করুক জনগণের চেয়ে বেশি সার্চ তারা করতে পারবে না। জনগণ হলো আসল সার্চের মালিক। তিন দিন আগে এই দশ জনের নাম প্রকাশ করা হলে তাদের সম্পর্কে জনগণ তথ্য দিতে পারবে। গোয়েন্দা বাহিনী যে তথ্য দিতে পারে না, জনগণ সে তথ্য দিতে পারে।’

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সার্চ কমিটির কাছে আমি আট জনের নাম বলেছিলাম। আমি কাউকে জিজ্ঞেস করে নাম দেই নাই। হঠাৎ হানিফ আবিষ্কার করলেন- এটা বিএনপির দেওয়া নাম। এই মিথ্যাচার কেন করলেন? এই ভুল তথ্য কেন দিলেন? এটা আমি জানি না। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কারও সঙ্গে গত তিন মাসে আমার কথাও হয়নি। আলাপ দূরের কথা। হানিফ আরেকটা ভুল কথা বলেছেন। বলেছেন আমি খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। আমি কোনো দিন বিএনপির সদস্য ছিলাম না, উপদেষ্টাও ছিলাম না।

তিনি বলেন, কিছু হলেই বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। তাদের চেতনা কতটুকু আছে? তারা বঙ্গবন্ধুর কথা শোনে না, আদর্শ মানে না, কিন্তু পূজা করে। এগুলো করে লাভ হবে না। দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসকের পরিবর্তে ন্যায়ভিত্তিক, আদর্শভিত্তিক, জনগণের কল্যাণকামী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘র’ এবং মোসাদের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রথমবার তিনি (শেখ হাসিনা) যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন তখন নিয়ম ছিল সপ্তাহে একদিন যে কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে পারবে। কিন্তু এখন তিনি সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা দলের কারও সঙ্গে দেখা করেন না। অন্তরীণ হয়ে আছেন তিনি।

সুষ্ঠু নির্বাচন করে শেখ হাসিনা ইতিহাসের অংশ হতে পারেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনি ভয় পাবেন না, আপনার কিছু হবে না। শুধু একটা মামলা হবে, সেটা হলো অপচয়ের। আমি জানি না আপনি কোনো দুর্নীতি করেছেন কিনা। তবে এতটুকু বলব, খালেদা জিয়ার সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, সেটা আপনার সঙ্গে হবে না। যদি হয়, তাহলে আমি আপনার পাশে দাঁড়াব।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্ব উপস্থিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী, ব্যারিস্টার মেজর (অব) সরোয়ার, ভাসানী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল খায়ের, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুসহ অন্যরা।