জঙ্গিবাদ দমনে র্যাবের দক্ষতার কারণে হলি আর্টিজানের ঘটনার পর এমন আর কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
ড. মোমেন বলেন, সন্ত্রাসবাদ, মাদক ও মানব পাচার হ্রাসে র্যাবের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। এসব ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে। তাই আমি তাকে আরো বলেছি, র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দুর্ভাগ্যজনক।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সাথে তার ফোনালাপের ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, র্যাবের সাবেক ও বর্তমান কয়েতজন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে বাংলাদেশের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্র ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। আমরা আলোচনা করবো। তিনি আমাকে বলেছেন যে, আগামী বসন্তে, আমি (ব্লিংকেন) আশা করি আপনি এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন আসবেন।
ড. মোমেন বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আলোচনা করতেই ফোন করেছিলেন এবং ব্লিংকেনের কণ্ঠে ইতিবাচক ইঙ্গিতটি তার ভাল লেগেছে । তিনি খুবই ইতিবাচক ছিলেন। তিনি যেভাবে কথা বলেছেন- তা আমার খুব ভাল লেগেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ব্লিংকেন তাকে বলেছেন যে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শন্তিরক্ষাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে একসাথে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। আমি তাকে বলেছি- (নিষেধাজ্ঞা জারির আগে) আপনারা আমাদের সাথে আলোচনা করতে পারতেন। যেমন আপনাদের সঙ্গে আমাদের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা চলছে। জবাবে ব্লিংকেন বলেছেন- আপনিও (মোমেন) আমাকে কল করতে পারেন। আমাকে (ব্লিংকেন) কল করতে সঙ্কোচ করবেন না।
ড. মোমেন বলেন, তিনি ব্লিংকেনকে বলেছেন যে, বাংলাদেশীরা এই নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টিকে পছন্দ করেনি। আমি তার কাছে এ ব্যাপারে দেশের মানুষের মনোভাব তুলে ধরেছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন যে, ওয়াশিংটনের সাথে আমাদের ৫০ বছরের অত্যন্ত আস্থার ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় বাংলাদেশের জনগণ যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত পছন্দ করেনি। আমরা আলোচনার মাধ্যমেই আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে সব ইস্যুর সমাধান করি। তাই আমরা আশা করি যে, আপনারা (যুক্তরাষ্ট্র) যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আমাদেরকে অবহিত করবেন।এর আগে গত শুক্রবার মাকির্ন অর্থ ও পররাষ্ট্র দফতর র্যাব এবং পুলিশের বর্তমান আইজি বেনজির আহমেদসহ র্যাবের সাতজন বর্তমান ও সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর মানবাধিকার বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বেনজির আহমেদ পূর্বে র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন পরের দিন শনিবার ঢাকায় নিযুক্ত মাকির্ন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তার দফতরে ডেকে নিয়ে এ ঘটনায় ঢাকার অসন্তোষ জানান।