আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী হিসেবে ওবায়দুল কাদের বহাল থাকলেও তিনি রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন বলে তার নির্বাচনী এলাকায় গুঞ্জন ছড়িয়েছে। ওবায়দুল কাদেরের ভাই কাদের মির্জাও এ তথ্য স্বীকার করেছেন। এজন্যই তিনি ভাইয়ের আসনে এমপি হিসেবে নিজের অবস্থান পোক্ত করতে মাঠে নেমেছেন বলে রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে।
দৈনিক প্রথম আলোর এক সরেজমিন প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নোয়াখালীতে বিশেষ করে কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট এলাকায় আলোচনা আছে, দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন ওবায়দুল কাদের। সে ক্ষেত্রে তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনটি শূন্য হবে। তখন ওই আসনে দল থেকে কে নির্বাচন করবেন? স্ত্রী, ভাই, না অন্য কেউ? এ নিয়ে পরিবার আর পরিবারের বাইরের নানামুখী তৎপরতা ও আশঙ্কা থেকে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে মাঠে নামেন আবদুল কাদের মির্জা।
প্রথম আলো জানায়, বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল শপথ নেন। সেই হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদে তার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের ২৩ এপ্রিল। দেশের জাতীয় রাজনীতিতে এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদ নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। কে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হবেন, তা নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগেও কোনো আলোচনা আছে বলে শোনা যায়নি।
তবে এলাকায় ওবায়দুল কাদেরের রাষ্ট্রপতি হওয়ার আলোচনার কথা স্বীকার করেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান ওরফে বাদলও। তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের যদি প্রেসিডেন্ট হয়ে যান তাহলে ওনার ওয়াইফ (স্ত্রী) এখানে এমপি ইলেকশন করবেন, কে বা কারা এটা কাদের মির্জার মাথায় ঢুকিয়েছে। এখানে টাকাপয়সার কিছু ব্যাপার থাকলেও কাদের মির্জার এসব কর্মকাণ্ডের মূল কারণ এটাই।’
এ বিষয়ে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। এ জন্যই তো তার বউ এত বেপরোয়া, তিনি এমপি হবেন। তবে আমার মনে হয় না নেত্রী (শেখ হাসিনা) এই ভুল করবেন।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টা করেছে বলেও প্রতিবেদনে জানিয়েছে প্রথম আলো। তবে তাকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। পরে মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা আবু নাছেরের ই-মেইলে প্রশ্ন পাঠানো হয়। তিনি জানান, ‘ই-মেইলের বিষয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে। মন্ত্রী মহোদয় ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ভাই কাদের মির্জার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেছেন, বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রী ও দলের প্রধানের নজরে আছে, উনি দেখবেন। আর এলাকায় তার (সেতুমন্ত্রী) রাষ্ট্রপতি হওয়ার আলোচনার বিষয়ে বলেছেন, এসব অপপ্রচার, গুজব। মহামান্য রাষ্ট্রপতির এখনো মেয়াদ আছে। এছাড়া এ পদের জন্য তিনি নিজেকে যোগ্য মনে করেন না।’