নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের অতিথি কক্ষে বসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় এবার এক নেতার বিরুদ্ধে কক্ষ ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করেছেন আরেক নেতা। বুধবার (১৫ মে) বিকেলে হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে এক লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত নেতা শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ। এদিকে অভিযোগকারী নেতা আতিকুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের মাস্টার্সের ছাত্র এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ১৯৪ কক্ষের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, গত ১১ মে ২০২৪ দিবাগত রাতে সাড়ে ১২টার দিকে হল শাখা ছাত্রলীগের বিতর্কিত সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের ধরে আমার অনুপস্থিতিতে আমার রুমের তালা ভেঙে প্রবেশ করে এবং রুমের ভিতরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। আমার রুমে থাকা ১টি ল্যাপটপ, ২টি ফ্যান, লাইট, ঘড়ি ও জমের যাবতীয় আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং ড্রয়ারে থাকা মোবাইল বিক্রির ২৬ হাজার টাকা ছিনতাই ও লুটতরাজ করে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে আমার ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে আতিক বলেন, ‘আমি অভিযোগের মাধ্যমে আমার ক্ষতির কথা হল প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি। আশা করি তারা ব্যবস্থা নিবে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নেতা নিয়াজ মোর্শেদ বলেন,’ঘটনার সময় আমার কর্মীরা হলের ছাদে ছিল। আর আমি সেই সময় হলে ছিলাম না। আমার নামে দেওয়া এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। কক্ষ ভাঙচুর বা টাকা লুটপাটের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ‘অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের সুষ্ঠু তদন্তের মধ্যে দিয়েই সেদিন রাতের ঘটনার প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১১ মে) রাতে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের অতিথিকক্ষে বসাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটে। রাত সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে হলের নিরাপত্তা প্রহরীকে আতিকসহ শাখা ছাত্রলীগের তিন নেতাকর্মীর মারধর এবং ১৩ মে রাতে পুনরায় রামদাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা। এতে ক্যাম্পাসজুড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে নিয়াজ মোর্শেদসহ শাখা ছাত্রলীগের ৪ নেতাকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।