বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সমাবেশ শুরু হয়।
এর আগে কর্মসূচিতে যোগ দিতে সকাল থেকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন হাজারো ছাত্র-জনতা। বিকেলের আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ছাত্র-জনতার ভীড়ে ভরে যায় পুরো শহীদ মিনার এলাকা।
এ সময় মঞ্চে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অন্য সমন্বয়কদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে নানা স্লোগান দেন উপস্থিত ছাত্র-জনতা। স্লোগানে-স্লোগানে উত্তাল পুরো এলাকা। তারা ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘উই ওয়ান্ট উই ওয়ান্ট, জাস্টিস, জাস্টিস, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’-এমন নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ শাহরিয়ারের বাবা মো. আবুল হাসানের বক্তব্যের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার ছেলে মিরপুর ১০ নম্বরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। আমাদের এখানে অনেক শহীদ পরিবার আছে এবং আহত পরিবারও আছে। আমার ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়তো। খুনি হাসিনা পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। খুনি হাসিনা ও তার মন্ত্রিপরিষদসহ হেলমেট বাহিনী এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আমি চাই এই খুনি হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হোক। আমরা কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। যদি এই খুনিদের বিচার না করা হয় আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো। আমাদের রাস্তায় নামাবেন না। আমরা চাই আমাদের সন্তান হত্যার বিচার করুন।
জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও ছাত্রনেতার বক্তব্যের পর মঞ্চে আসেন চট্টগ্রামের ছাত্র সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি। তিনি বলেন, ‘পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে দ্বিতীয় বিপ্লব ঘোষণা করা হবে।
সমাবেশস্থলে পুলিশ, পুলিশের ডগ স্কোয়াড, র্যাব, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।
মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি থেকে আজ ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের ঘোষণা ছিল। তবে সোমবার রাতে জরুরি বৈঠক শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষণা দেয়, অন্তর্বর্তী সরকার একই ধরনের ঘোষণাপত্র তৈরি করছে, আর তাতে সমর্থন আছে তাদের।
তবে শহীদ মিনারে সমবেত হওয়ার কর্মসূচি বহাল থাকছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রটি কেমন হবে তা শহীদ মিনারের কর্মসূচিতে তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।