বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যার মামলায় পাঁচ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ায় একজনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ।
ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যার মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, নাস্তিকতার অভিযোগ এনে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের অভিযুক্ত সদস্যরা সাংগঠনিকভাবে অভিজিৎকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। স্বাধীনভাবে লেখা ও মত প্রকাশের কারণে জীবন দিয়ে মূল্য দিতে হয় অভিজিৎকে। এই রায়ে ন্যায়বিচারের পাশাপাশি মুক্তমনারা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশে সাহস পাবে বলে উল্লেখ করা হয় রায়ের পর্যবেক্ষণে।
সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক ওরফে জিয়াসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরও চার আসামি হলেন মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ। সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ৬ (২) (অ) ধারায় পাঁচজনকে সর্বোচ্চ দণ্ডের পাশাপাশি তাদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদ- দেওয়া হয়েছে রায়ে। দণ্ড-প্রাপ্তরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য। অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় ও সরাসরি অংশ না নিলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে আসামি ফারাবীকে একই আইনের ৬ (২) ৮ (আ) ধারায় যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলা এ হত্যাকাণ্ডের প্রায় ছয় বছর ও বিচার শুরুর দেড় বছরের বেশি সময় পর এ মামলার রায় হলো। তবে, রায়ের সময় অভিজিতের পরিবারের কেউ আদালতে ছিলেন না।
২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন অভিজিতের বাবা পদার্থবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক অজয় রায়। এর কিছুদিন পর ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর ছেলে হত্যার বিচার দেখে যাওয়ার আগেই মারা যান তিনি। এর আগে মারা যান অভিজিতের মা। অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা যুক্তরাষ্ট্রে।
অভিজিৎ হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জিয়া ও আকরাম এখনো পলাতক। জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফীন দীপন হত্যা মামলায় একই আদালতে এ দুজনসহ আবু সিদ্দিক সোহেল ও মোজাম্মেল হোসাইনের ফাঁসির রায় হয়েছে গত ১০ ফেব্রুয়ারি। দীপন হত্যা মামলায় মোট আটজনের ফাঁসির রায় দেয় একই আদালত।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত