ভয়ে লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ নেওয়ার সাহস করছে না যুক্তরাষ্ট্র

ইয়েমেনিদের ভয়ে লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ নেওয়ার সাহস করছে না যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি স্বীকার করেছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ। তিনি বলেন, ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর হামলার ফলে মার্কিন জাহাজগুলো ব্যয়বহুল পথ দিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এই খবর জানিয়েছে দ্য জাপান টাইমস।

ফিলিস্তিনের অসহায় জনগণের ওপর অব্যাহত হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইয়েমিনিরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে মাইক ওয়াল্টজ বলেন, ‘ইয়েমেনিদের হামলার ফলে তিন-চতুর্থাংশ মার্কিন পতাকাবাহী জাহাজ লোহিত সাগর এড়িয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে।

ওয়াল্টজ সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন, ৭৫ শতাংশ মার্কিন পতাকাবাহী জাহাজ এখন সুয়েজ খালের পরিবর্তে আফ্রিকার দক্ষিণ উপকূল দিয়ে যেতে হচ্ছে। তিনি আরও জানিয়েছেন : ‘তাদের একটি ডেস্ট্রয়ার যখন শেষবার ইয়েমেনের কাছের প্রণালি দিয়ে গিয়েছিল তখন এটি ২৩ বার আক্রমণের শিকার হয়েছে।’

মঙ্গলবার ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি জানিয়েছেন, ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী দুটি জুলফিকার-টাইপ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং দুটি ফিলিস্তিন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে। আরেকটি অভিযানে ইয়েমেনি নৌ, ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট এবং ড্রোন ইউনিট মার্কিন বিমানবাহী রণতরী হ্যারি ট্রুম্যান এবং এর সাথে থাকা আরও কয়েকটি জাহাজে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এই অভিযানের মাধ্যমে ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলার একটি পরিকল্পনা ব্যাহত হয়েছে। ২০২৩ সালের শেষে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে হুতিরা এ পর্যন্ত জাহাজ চলাচলের রুটে ১০০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, গাজায় ইসরায়েলি দখলদারিত্ব ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই সামরিক তৎপরতা জোরদার করা হবে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত হুথিদের এই হামলার দাবি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে গত কয়েক মাসে লোহিত সাগর ও এর আশপাশের অঞ্চলে হুথি হামলার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনী পূর্ববর্তী কয়েকটি হামলা প্রতিহত করার কথা স্বীকার করলেও এবারের ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।

এর আগে সোমবার রাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, ইয়েমেন থেকে উৎক্ষেপিত একটি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের আকাশসীমায় প্রবেশের আগে ধ্বংস করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ইসরায়েলি আকাশসীমার ভেতরেই ভূপাতিত হয় এবং ধ্বংসস্তূপের টুকরো দেশটির ভূখণ্ডে পড়ে।