এখন পর্যন্ত বৈশ্বিকভাবে যতধরনের জরুরী অবস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জারি করেছে, তার মধ্যে করোনাভাইরাসকেই সবচেয়ে মারাত্মক ধরণের ব্যাধি বলে ঘোষণা দিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসুস।
,টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসুস বলেছেন, সর্বশেষ পরিস্থিতি বিশ্লেষণের জন্য এ সপ্তাহেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমারজেন্সি কমিটির সভা আহ্বান করবেন তিনি।
এর আগে আরো পাঁচবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিকভাবে জরুরী অবস্থা জারি করেছিল—ইবোলা প্রাদুর্ভাব নিয়ে দুইবার, জিকা, পোলিও এবং সোয়াইন ফ্লু।
জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে এক কোটি ৬০ লাখের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন, এবং সাড়ে ছয় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন।
“বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৩০ শে জানুয়ারি যখন টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসুস জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন, তখন চীনের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল একশো’রও কম এবং কোন মৃত্যুও ছিল না।”
তিনি বলেন “কোভিড-১৯ আমাদের পৃথিবী বদলে দিয়েছে। এটি সারা দুনিয়ার সব মানুষ, কম্যুনিটি আর সব জাতিকে এক জায়গায় নিয়ে এসেছে, আবার বিচ্ছিন্নও করেছে পরস্পরের থেকে।”
তিনি উল্লেখ করেন, কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা গত ছয় সপ্তাহে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
ইতিমধ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশে যা ঘটেছে—
১) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রেইন কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। মার্কিন প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে তিনিই প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত হলেন। ২) স্পেন থেকে যুক্তরাজ্যে ফেরা যে কোন ব্যক্তিকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে ব্রিটেনের এমন পদক্ষেপের পর স্পেন দাবি করেছে দেশটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসছে এবং ভ্রমণের জন্য দেশটি এখন নিরাপদ। ৩) ভিয়েতনামে এপ্রিল মাসের পর ১৫জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হবার পর উপকূলীয় শহর ডা নাঙ ট্যুরিস্টদের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ৪) মার্কিন বায়োটেক প্রতিষ্ঠান মর্ডানা করোনাভাইরাসের একটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে। ৫) বেলজিয়ামে আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে লকডাউন না দিয়ে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে।
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসুস বলেছেন, সীমান্ত বন্ধ করে, অর্থনীতি ক্ষতি সহ্য করে বিশ্বব্যাপী দীর্ঘদিন জরুরি অবস্থা জারি রাখা সম্ভব নয়।
তবে, কোন দেশে নতুন করে প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে লকডাউন দেয়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃবৃন্দ।”কিন্তু সেটি হতে হবে সংক্ষিপ্ত, ছোট ছোট ভৌগলিক এলাকায় এবং কার্যকর।”