বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (অব.) মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর ফলে এতদিন পলাতক থাকা এই খুনির ফাঁসির দিন গণনা শুরু হয়ে গেল।
এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, ফাঁসির রায় কার্যকরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হবে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামির প্রাণভিক্ষা খারিজ হলে সাধারণত ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর হয়। তবে বঙ্গবন্ধুর এই খুনির ক্ষেত্রে সেই নিয়ম প্রযোজ্য নাও হতে পারে। কারণ, সে এতদিন পলাতক থাকায় তার সকল নিয়মাবলী অকার্যকর হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হতে পারে।
ক্যাপ্টেন অবসরপ্রাপ্ত আবদুল মাজেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত আরও পাঁচ খুনি বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সবাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদের পৈতৃক বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার। তিনি একইসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউনে কর্মহীন জেলেদের জন্য আসা ত্রাণের চাল চুরি করে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন এই চেয়ারম্যান। তাদের চাল চুরির সংবাদ করায় স্থানীয় এক সাংবাদিককে মারধরও করেছেন তারা।
এছাড়া আরও বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে- বঙ্গবন্ধুর এই খুনির নাতিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। তার দাদার কুকীর্তি জানার পর সেই কমিটি স্থগিত করা হলেও পরবর্তীতে প্রভাবশালীদের তৎপরতায় আবারও সেই কমিটি বহাল করা হয়েছিল।
ক্যাপ্টেন (অব.) মাজেদের নাতি বোরহানউদ্দিন উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সেই সাধারণ সম্পাদকের নাম মুজিব উল্যাহ পলাশ বিশ্বাস। তাদের পরিবারের এক নারীও সরকারি চাকরিজীবী। পরে স্থানীয়দের প্রতিবাদ ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।