বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ফের বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ চুরির যে খবর ভারতীয় একটি মিডিয়ায় প্রকাশ হয়েছে, সেটিকে ‘ভুয়া ’ বলে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (১৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ফের বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় একটি পত্রিকা। সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া খবর। নিউইয়র্ক ফেডের সাথে আমাদের এখন তিন স্তরের নিশ্চিতকরণ নিরাপত্তা এবং লেনদেনের নিয়মিত সমন্বয় রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) ভারতীয় একটি পত্রিকায় ‘আর ইন্ডিয়ান হ্যাকারস বিহাইন্ড দিস মান্থস বাংলাদেশ ব্যাংকস হাইস্ট ইনভলভিং বিলিয়নস?’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ‘ভারতীয় অজ্ঞাতপরিচয় সন্দেহভাজন হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রায় এক সপ্তাহ আগে বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ হ্যাক করে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছে। উভয় দেশের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রিজার্ভ হ্যাকের ঘটনাটি তদন্ত করছে।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘ভারতীয় ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ভারতে হ্যাকারদের সঠিক অবস্থান নির্ণয় করার চেষ্টা করেছে। তবে তৃতীয় দেশ থেকেও হ্যাকিং পরিচালিত হতে পারে- এমন সম্ভাবনাকেও তারা উড়িয়ে দিচ্ছে না।’
এর আগে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরি হয়েছিল। ওই চুরির ঘটনা বাংলাদেশ ২৪ দিন গোপন রেখেছিল। তবে এরপর ঘটনা জানাজানি হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে একই বছরের ১৫ মার্চ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল সরকার।
সেদিন বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল থানায় মামলা করে এবং পরদিন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডির কাছে মামলা হস্তান্তর করা হয়। ফরাসউদ্দিন কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় একই বছরের ৩০ মে। এ ঘটনা তদন্ত করেছে সিআইডিও। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) পৃথক তদন্ত করেছে। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি ফৌজদারি মামলার নথিতে এফবিআইয়ের তদন্তের তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সেসময় হ্যাক হওয়া অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যায় ২ কোটি ডলার, যে অর্থ অবশ্য উদ্ধার করা হয়েছে, তবে বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে ফিলিপিন্সের বিভিন্ন ক্যাসিনোয় ঢুকে যায়। চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৪৬ লাখ ডলার উদ্ধার করা হয়েছে; বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার এখনো পাওয়া যায়নি।
সেই ধাক্কা না সামলাতেই এরমধ্যে এখন নতুন করে বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ হ্যাকের খবর আসলো। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক এই রিজার্ভ চুরির খবরকে ভুয়া নিউজ বলে দাবি করেছে।