নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি’র বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের মধ্যে এবার ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন দলীয় প্রধান ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
ওই সভায় দেয়া ভাষণে তিনি বলেন: ‘সত্যি যদি বুকের পাটা থাকে, তা হলে মানুষে মানুষে বিভাজন না ঘটিয়ে সারা ভারতে একটা গণভোট করান। তবে এই গণভোট আপনারা করবেন না, জাতিসংঘ করবে।’
তিনি বলেন: এই গণভোটে যদি বিজেপি হেরে যায়, তাহলে তাদের সরকার ছেড়ে দিতে হবে।
নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের উদ্দেশে মমতা বলেন: একটা ভোট করা হোক। কারণ আপনাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে বলে যা খুশি তা করতে পারেন না। আপনারা সব কিছুতে ভয় দেখাচ্ছেন। জাতিসংঘের অধীনে গণভোট হলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, ক’জন এই আইনের পক্ষে আর ক’জন বিপক্ষে।
তবে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ বিষয়ে কথা বলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়-ও।
দিলীপ ঘোষ বলেন: ‘সংসদে আইন পাশ হয়েছে, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন সেই আইন মানেন না। শুধু নিজে নন, নিজের দলের সাংসদদের দিয়েও শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন যে, সিএএ মানবেন না। এটা সংবিধানের সাংঘাতিক লঙ্ঘন। কিন্তু এরপরও তিনি থামছেন না। জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাইছেন!
তার ভাষায়: এর অর্থ হচ্ছে দেশের সুপ্রিম কোর্টের উপরেও তার আস্থা নেই। মমতা আইন মানেন না, সংসদ মানেন না, সুপ্রিম কোর্ট মানেন না। তিনি দেশের সংবিধানটাই মানেন না। সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। এর ফল তিনি পাবেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের জেরে রাজ্যপাল টুইটারে লিখেছেন: নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে ক’জন, বিপক্ষে ক’জন, তা দেখার জন্য জাতিসংঘ বা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতো কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে গণভোট করানো হোক বলে যে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী করেছেন, তা প্রত্যাহার করতে আমি তাকে অনুরোধ করছি। মানুষের ভোগান্তি কমানোর স্বার্থে স্বাভাবিকতা ফেরানোর জন্য বিক্ষোভের পথ থেকে সরে আসার জন্য আমি সবাইকে আবেদন জানাচ্ছি।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি’র প্রতিবাদে রাজধানী নয়াদিল্লিসহ বিক্ষোভে উত্তাল ভারতের বিভিন্ন রাজ্য। আইনটির প্রতিবাদে প্রায় এক সপ্তাহ আগে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল আসাম, মেঘালয় আর ত্রিপুরায়। পশ্চিমবঙ্গে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে চলছে আন্দোলন। আইনটির বিরুদ্ধে রোববার রাতে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হলে সোমবার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।
রাষ্ট্রপতির কাছে আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীসহ বিরোধীদলীয় নেতারা।
তবে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সরকার অনড় বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিক্ষোভকারীরা সরকারি সম্পত্তিতে কোনো ধরনের সহিংসতা চালালে দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী সুরেশ অঙ্গদি।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত