মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটুক্তি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করায় চট্টগ্রাম-১৬ আসনের এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে ঢাকা মহানগর উত্তর এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আহমেদ হাসনাইন তাকে উক্ত এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এসময় তাকে ঢাকা মহানগর উত্তর এলাকার যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই প্রতিহত করা হবে বলে জানান মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের এই নেতা।
জানা যায়, গত ২৭ জুলাই অন্তিম যাত্রায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্ধারিত রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার ছাড়াই বাঁশখালী উপজেলার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ডা. আলী আশরাফকে শেখেরখীল এলাকায় নিজ বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়। এরপরই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সাংসদ মোস্তাফিজ মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি এ নিয়ে নিউজ করায় সাংসদের সহকারী চট্টগ্রামের এক সাংবাদিককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করার হুমকি দেন।
এসব ঘটনার প্রতিবাদে ক্রমেই উত্তাল হয়ে ওঠে বাঁশখালী। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা ডা. আলী আশরাফের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা না দেয়া এবং সংসদ সদস্যের দ্বারা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
ওই সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার এবং বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানকে দলীয় পদ থেকে অপসারণের দাবি করেছেন প্রয়াত মুক্তিযুদ্ধা আলী আশরাফের ছেলে জয়নাল আবেদীন।
অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাকে দাফনের সময় গার্ড অব অনার না দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ওই কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় ছাত্রলীগের এক নেতাসহ দুজন আহত হন। এদের মধ্যে ইমরুল হক চৌধুরী নামের একজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হামলাকারীরা এমপি মোস্তাফিজের ক্যাডার বলে ছাত্রলীগ নেতারা গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষা এবং অধিকার আদায়ে সোচ্চার সংগঠন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি সাংসদ মোস্তাফিজকে ওই এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
প্রিয়দেশ নিউজকে তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটুক্তির মতো ধৃষ্টতা দেখানোয় সাংসদ মোস্তাফিজকে ঢাকা মহানগর উত্তর এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এমপি মোস্তাফিজ যতক্ষণ পর্যন্ত ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ঢাকা মহানগর উত্তর এলাকায় তাকে দেখা গেলেই কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। এছাড়া তার বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে দলীয় পদ এবং সদস্য পদ থেকে অপসারণ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ আকারে জমা দেওয়া হবে। স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা হলে তিনি যেই হোন না কেন, তাকে কোনভাবেই বরদাশত করা হবে না।