ছাগলকাণ্ডে আলোচিত এনবিআরের শুল্ক ও আবগারি ক্যাডারের কর্মকর্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৮৩ ব্যাচের ফিন্যান্সের ছাত্র ছিলেন। তার ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপ-৮৩ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। এই গ্রুপে প্রতিদিন ভোরে কোরআন-হাদিসের উদ্ধৃতি সংবলিত সৎ হওয়ার উপদেশ দিতেন তিনি। সৎপথে চলো, সৎকর্ম করো, ঘুষ গ্রহণ থেকে বিরত থাকাসহ নানা ধরনের ধর্মীয় বিষয় পোস্ট করতেন তিনি। মতিউর রহমানের ঢাবি-৮৩ ব্যাচের একাধিক বন্ধু এসব তথ্য জানান।
দৈনিক কালবেলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মতিউরের এসব উপদেশ বন্ধুদের অনেকে ভালোভাবে নিতেন। আবার অনেকে বিরক্ত হতেন। এ কারণে অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেন।
ছাগলকাণ্ডের বিষয়টি আলোচনায় আসার পর থেকে এই গ্রুপে পক্ষে-বিপক্ষে নানা ধরনের মতামত আসে। কিছু সুবিধাভোগী তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও দাবি করেন। ছাগলকাণ্ডের পর মতিউরের অঢেল সম্পত্তির তথ্য বেরিয়ে আসার পর থেকে তার প্রতিদিনের কোরআন-হাদিসের বাণী সংবলিত পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেন অনেকে। তারা বলছেন, নিজে অঢেল সম্পত্তি গড়ে তুলে বন্ধুদের সৎ থাকা, সৎ পথে অর্থ উপার্জন করা, ঘুষ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার উপদেশ দিত প্রতিদিন।
এ বিষয়ে গ্রুপ-৮৩-এর সদস্য সৈয়দ বোরহান কবীর বলেন, পোস্ট দেখে মতিউর সম্পর্কে অনেকেরই ভালো ধারণা ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, বন্ধুদের সৎ হওয়ার পরামর্শদাতা নিজেই অগাধ সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন, যা সৎভাবে কোনোদিন সম্ভব নয়। নিজে সৎ না হয়ে প্রতিদিন সৎ থাকার পরামর্শ দিতেন মতিউর।
এর আগে মতিউরের অস্বীকার করা দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান ইফাতকে গাড়ি কিনে দেওয়া নিয়ে প্রথম স্ত্রীর সন্তান ফারজানা রহমান ইপ্সিতা ইনস্টাগ্রামে কমেন্টস করেন। এতে তিনি লেখেন, ‘মতিউর আপনার প্রোফাইলে ট্যাগ করা যাচ্ছে না। ছেলেকে নতুন গাড়ি কিনে দিয়েছ, এবার আমাকে দেশে আসতে দাও, দেখব’।
সম্প্রতি ছাগলকাণ্ডের এসব বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইপ্সিতা বলেন, বিশ্বাস করেন, ‘আমার বাবারে প্রটেক্ট করার কোনো ইচ্ছাই আমার নেই। তার ওপর আমার জেদ। আল্লাহর কসম, বাবারে আমি ছারুম না। সে আমারে ধোঁকা দিছে (দিয়েছে), আমার মারে (মাকে) ধোঁকা, আমার ভাইরে ধোঁকা দিছে। আমি তারে ছারুম? জীবনেও না। তার জন্য আমার নাম নষ্ট হবে, মার নাম নষ্ট হবে, এইটা আমি হইতে দিমু না।’