বাংলাদেশ:
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে নতুন করে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩,৮৬৮ জন জন।মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ৪৭৪ জনে। এ সময়ে যতগুলো নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তার মধ্যে ২০.৯১ শতাংশের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে । এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট পরীক্ষা হয়েছে ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৯৪১টি নমুনা।
মারা গেছেন আরো ৪০ জন।দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট ১,৬৬১জনের মৃত্যু হয়েছে।
নতুন মারা যাওয়া ৪০ জনের মধ্যে ৩১ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১,৬৩৮ জন সুস্থ হয়েছেন এবং বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৫৩,১৩৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
ইরানে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছিল মধ্যপ্রাচ্যে সবচাইতে গুরুতর। সেখানে ২১৫,০০০-এরও বেশি আক্রান্ত এবং ১০ হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু সরকারিভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে।
তবে বিবিসি ফারসি'র অনুসন্ধানে দেখা যায়, শীতকালে ইরানে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬,৪০০ বেশি মৃত্যু হয়েছে - যা ওই একই সময়ে করোনাভাইরাসে মৃতের সরকারি সংখ্যার চাইতে ৫০০০ বেশি।
রাজধানী তেহরানে এই একই সময়ে ‘অতিরিক্ত’ মৃত্যুর সংখ্যা ছিল একই সময়কালে সারা দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সরকারি সংখ্যার চেয়েও বেশি
ইথিওপিয়া:
ইথিওপিয়ায় ৫,০০০ লোক কোভিড-১৯এ আক্রান্ত হয়েছেন, ৭৫ জন মারা গেছেন।
ইথিওপিয়ায় ১১৪ বছরের এক বৃদ্ধ করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েও সুস্থ হয়ে উঠেছেন।আদিস আবাবার একটি হাসপাতালের ডাক্তার ইয়ারেদ আগিদিউ এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, তারই পরিচালিত সেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছেন ওই শতবর্ষী লোকটি।
মনে করা হয় যে ৮০ বছর বা তার বেশি বয়সের লোকেরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। কিন্তু ডা. ইয়ারেদ বলছেন, ১১৪ বছরের এই বৃদ্ধ পুরোপুরি সেরে উঠেছেন। “তার স্বাস্থ্য এখন ভালো আছে। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা দীর্ঘজীবী ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হোক!” – ফেসবুকে লেখেন তিনি। ইথিওপিয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫,০০০ লোক কোভিড-১৯এ আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৭৫ জন মারা গেছেন। অবশ্য কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েও বেঁচে গেছেন এমন শতবর্ষী ইথিওপিয়ার এই লোকটিই প্রথম নন। ব্রিটেনে অন্তত তিনটি এমন ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে একজন ছিলেন বার্মিংহ্যামের ১০৬ বছরের বৃদ্ধা কনি টিচেন – যাকে মনে করা হয় করোনাভাইরাস থেকে বেঁচে যাওয়া ব্রিটেনের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ।
যুক্তরাজ্য:
গত-কিছু-দিনে-একাধিক-দেশের-কসাইখানার-কর্মীদের-মধ্যে-কোভিড-সংক্রমণ-ধরা-পড়েছে.
যুক্তরাজ্যের পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের একটি মাংসের কারখানার ১৬৫ জন কর্মী করোনাভাইরাস পজিটিভ বলে চিহ্নিত হয়েছেন। কোবার নামে কারখানাটিতে কত লোক কাজ করতো তা জানানো হয়নি। মাংস কারখানায় কোভিড সংক্রমণের ঘটনা এই প্রথম নয়। কয়েক দিন আগেই জার্মানির নর্থ রাইন-ওয়েস্টফ্যালিয়া অঞ্চলেএকটি কসাইখানার ১৫০০কর্মীর দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত কিছুকালের মধ্যে ইউরোপ,আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন মাংস প্রক্রিয়াজাত করার কারখানা এবং কসাইখানার কর্মীদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।
সাধারণত ভাইরাস সংক্রমণের শিকার কোনো ব্যক্তির হাঁচি, কাশি বা নিশ্বাসের মাধ্যমে বের হওয়া ড্রপলেট থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটে থাকে।সংক্রমণের শিকার ব্যক্তির কাছাকাছি আসা ছাড়াও জীবাণুযুক্ত কোনো জায়গা স্পর্শ করার মাধ্যমেও ভাইরাস সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে।
ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের মলিকিউলার অঙ্কোলজির অধ্যাপক লরেন্স ইয়াং বলেন, "ফ্যাক্টরিগুলোতে, বিশেষ করে যেসব জায়গা ঠান্ডা এবং স্যাঁতস্যাঁতে, দীর্ঘসময় করোনাভাইরাস টিকে থাকা এবং ছড়ানোর জন্য আদর্শ পরিবেশ থাকে।""অন্য জায়গার চেয়ে সেসব জায়গায় জীবাণু বহনকারী ড্রপলেট ছড়ানো এবং টিকে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে।"
এছাড়া এই ধরণের কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি উচ্চ মাত্রায় শব্দ করে বলে মানুষজন অপেক্ষাকৃত উচ্চস্বরে কথা বলে এবং ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে বলছেন বিজ্ঞানীরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কর্মীদের সামাজিক দূরত্ব মানানো কঠিন হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা বেশি ঘটছে।
বিভিন্ন সুপারশপ বা কেএফসি, ডমিনোজ, ম্যাকডোনাল্ডসের মত ফাস্টফুড চেইনের জন্য বিপুল পরিমাণে মাংস প্রক্রিয়াজাত করার চাপ থাকায় কারখানাগুলো কর্মীদের দিয়ে কম সময় কাজ করাতে পারছে না এবং কাজটি কঠিন হওয়ায় কর্মীরা দীর্ঘসময় মাস্ক পরে কাজ করতে না পারাও এসব কারখানার কর্মীদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে এসব কারখানায় ব্যবহৃত মাংস থেকে কর্মীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে - এরকম কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি বলছে খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
তবে কারখানার ভেতরের পরিবেশ ছাড়াও অন্যান্য অনেক কারণে কারখানার কর্মীদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেশি হতে পারে। "অনেক ফ্যাক্টরির কাছাকাছি জায়গায় তাদের কর্মীদের বাসস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেখানে তারা একসাথে বাসে করে যাওয়া আসা করে। অনেকক্ষেত্রে তাদের বাসস্থানের পরিবেশও অস্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে।"
মাংস প্রক্রিয়াজাতের কারখানাগুলোর পাশাপাশি মাংস সংরক্ষণের জায়গা, অর্থাৎ রেফ্রিজারেটরেও এই ভাইরাস অপেক্ষাকৃত দীর্ঘসময় টিকে থাকতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর আগে যেসব করোনাভাইরাস পরিবেশে ছিল, সেগুলোর কয়েকটি প্রজাতি হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রায় পুরোপুরি কার্যকরভাবে বেঁচে না থাকলেও স্থিতিশীল অবস্থায় টিকে থাকে বলে প্রমাণ পেয়েছিল বিজ্ঞানীরা।
২০১০ সালে আমেরিকান সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলোজি'র এক গবেষণায় উঠে আসে যে সার্স করোনাভাইরাস (যেটি অনেকটা কোভিড-১৯ ভাইরাসের মত) ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় (প্রায় ৪.৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) যেরকম আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা থাকে, ঐ পরিবেশে টিকে থাকতে পারে।
সাধারণত গৃহস্থালিতে যেসব রেফ্রিজারেটর ব্যবহার করা হয়, সেগুলোতে এই তাপমাত্রা থাকে।গবেষণায় উঠে আসে, তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতা ২০ শতাংশের নীচে হলে সার্স করোনাভাইরাস প্রায় ২৮ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে, যেখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর আর্দ্রতা ৮০ শতাংশ হলে ভাইরাসটির স্থায়িত্বকাল থাকে ৬ ঘণ্টার মত।
অনেক বিশেষজ্ঞ এই প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে আর পরবর্তী গবেষষণার জন্য অপেক্ষা না করে ফ্রিজ ব্যবহারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।
তারা বলছেন কাছাকাছি প্রজাতির একটি করোনাভাইরাস যেহেতু ফ্রিজে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে, কাজেই নভেল করোনাভাইরাসেরও একই বৈশিষ্ট্য থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।(তথ্য:বিবিসি)
যুক্তরাষ্ট্র:
ওকলাহোমায় যাবার পর সিক্রেট সার্ভিসের দুজন এজেন্ট কোভিড পজিটিভ হয়েছেন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের দুজন এজেন্ট – যারা রোববার ওকলাহোমায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনসভায় ছিলেন –কোভিড-১৯ পজিটিভ বলে ধরা পড়ার পর সংস্থাটির কয়েক ডজন কর্মীকে সেল্ফ আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। সিক্রেট সার্ভিস অবশ্য তাদের ঠিক কতজন আইসোলেশনে আছে তা বলে নি।
ওকলাহোমার টালসা শহরে যখন কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়ছে - সেই সময় সেখfনে নির্বাচনী সভা করায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমালোচনা হয়।সেই সভার আগে তার প্রচার টিমের ৬ জন সদস্য এবং পরে দু’জন করোনাভাইরাস পজিটিভ বলে ধরা পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের আটটি অংগরাজ্যে এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে । নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি ও কানেক্টিকাটের কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই আটটি রাজ্য থেকে আগতদের ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় এক পূর্বাভাসে বলছে, অক্টোবর মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৮০ হাজার লোক করোনাভাইরাসে মারা যাবে। তবে যদি ৯৫ ভাগ আমেরিকান মাস্ক পরে তাহলে মৃত্যুর সংখ্যা হবে ১ লাখ ৪৬ হাজার।যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাসে ২৩ লাখ লোক আক্রান্ত এবং ১ লাখ ২১ হাজার লোক মারা গিয়েছেন।
ভারত:
করোনাভাইরাসে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন চার লক্ষ ৯০ হাজার ৪০১ জন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ২৯৬ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন কোভিডে। ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের নিরিখে যা সর্বাধিক। দেশে এক দিনে এত জনের সংক্রমণ এর আগে হয়নি। এ নিয়ে ভারতে মোট আক্রান্ত হলেন চার লক্ষ ৯০ হাজার ৪০১ জন।
দেশে মৃতের সংখ্যা শুক্রবার ১৫ হাজার ছাড়াল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত দেশে ১৫ হাজার ৩০১ জনের মৃত্যু হল করোনার কারণে।
দেশে সুস্থ হয়ে ওঠা গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৯৪০ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট দু’লক্ষ ৮৫ হাজার ৬৩৭ জন দেশবাসী করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত