সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাতের ঘটনায় সারা দেশে পুলিশের চিরুনি অভিযানে গতকাল রবিবার পর্যন্ত সাত হাজারের বেশি সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল ছিল অভিযানের নবম দিন।
পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা দেয়াসহ সহিংসতার অভিযোগে বিভিন্ন জেলায় করা পাঁচ শতাধিক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরো দুই সমন্বয়ককে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দিতে পুলিশের হেফাজতে নিয়েছে।
তারা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নুসরাত তাবাসসুম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেল। এছাড়া বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে এই আন্দোলনে উসকানি দেয়ার অভিযোগে আটক করার দাবি করেছে তার পরিবার। তবে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছয়জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার তথ্য দিয়েছে ডিবি।
নুসরাত তাবাসসুমকে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে আটক করে ডিবিতে নেয়া হয়। অন্যদিকে গত শনিবার(২৭ জুলাই) দিবাগত রাত ১টার দিকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আসিফকে তার রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে আটক করে ডিবিতে নেয়ার দাবি করেছে পরিবার।
পুলিশ সূত্র বলছে, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ১ জুলাই শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন শুরু হয়। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
এর পরদিন থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী।
গ্রেপ্তারকৃতদের দেশের বিভিন্ন কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অনেককে রিমান্ডে এনে করা হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদ। এসব ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের আরো অনেক নেতাকর্মী আছেন বলে ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান জারি রেখেছে।