পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ডা. শারমিন ইয়াসমীন জানাচ্ছেন - না, একদমই না। কোভিড-১৯ রোগ সেরে গেলেও ডাক্তারকে ভুলে যাওয়া উচিত হবে না।
"করোনাভাইরাসের চিকিৎসার সময় প্রাথমিকভাবে জরুরি ঔষধ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে রোগীকে ভালোর দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। ফলে তখন লক্ষ্যটাই থাকে যে রোগীর অবস্থা যেন আরও খারাপ না হয়, রোগী যেন ভালোর দিকে যাত্রা শুরু করতে পারে," প্রিয়দেশ নিউজকে” বলছিলেন তিনি।
এই চিকিৎসক আরও বলেন, "কিন্তু ভাইরাসটি আক্রমণ করে কোথাও ক্ষতি করেছে কি-না, বা অন্য কোনো বিষয়ে চিকিৎসার পরবর্তীতে প্রয়োজন আছে কি-না, তার কিন্তু ফলো-আপ জরুরি পরবর্তী জীবনে ভালো থাকার জন্য"।
চট্টগ্রামে একজন চিকিৎসক একবার ভালো হয়ে আবার সংক্রমিত হয়ে শেষ পর্যন্ত মারা গেছেন - এমন উদাহরণ সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের দিয়ে তাদের জন্য বিশেষ কিছু পরামর্শও দেন শারমিন ইয়াসমীন।
তিনি বলেন, অনেক সময় ভাইরাস সংক্রমণের কারণে রক্ত জমাট বেধে রক্ত প্রবাহের নালীগুলো আটকে যায়, যার জন্য পরবর্তীতেও চিকিৎসা দরকার হতে পারে।
সুস্থ হলেও মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি
১. সুস্থ হয়ে গেলেও ফলো-আপ চিকিৎসা করাতে হবে ২. প্রয়োজনীয় টেস্টগুলো সময়মত করিয়ে চিকিৎসককে দেখাতে হবে ৩. শারীরিক সুস্থতার জন্য দরকারি ব্যায়ামগুলো অব্যাহত রাখতে হবে ৪. বয়স বা অন্যান্য রোগের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের সার্বক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে, কারণ করোনাভাইরাস আবার আক্রান্ত করবে না এমন কোন নিশ্চয়তা এখনো পাওয়া যায়নি ৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে সতর্কভাবে কাজ করা ৬. মনে রাখতে হবে, অ্যান্টিবডি সবসময় সুরক্ষা দেয় না, কারণ এটা নির্ভর করে ব্যক্তি কতটা আক্রান্ত হয়েছেন তার ওপর ৭. স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক সুরক্ষার নিয়ম-কানুন পুরোপুরি মেনে চলা।
মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়েও সতর্ক থাকতে হবে
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেনিন চৌধুরী প্রিয়দেশ নিউজকে” জানাচ্ছেন যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি অনেক সময় মানসিকভাবে বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন, ফলে চিকিৎসার মাধ্যমে শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও পরবর্তীতেও মানসিক ট্রমা তার মধ্যে কাজ করে।
"তাই পরিবার ও সমাজের উচিত হবে তার পাশে থেকে সাহায্য করা, যাতে তিনি সহজে এটাকে মেনে নিয়ে চলতে পারেন। আবার আমাদের দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের নিয়ে যে সোশ্যাল স্টিগমা (সামাজিক কলঙ্ক) তৈরি হয়, তা যেন পরবর্তীতে তার জন্য সমস্যা সৃষ্টি না করে, সেটিও দেখতে হবে," বলছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে যাওয়াটাই শেষ কথা নয়।
"মনে রাখতে হবে, গবেষণায় দেখা গেছে করোনাভাইরাস ফুসফুসের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষত তৈরি করতে পারে। তাই ফুসফুসের ক্ষত বা প্রদাহ আছে কি-না, সেটি সুস্থ হওয়ার পর ভালো ভাবে নিশ্চিত হতে হবে"।
সব মিলিয়ে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হলেও নিয়মিত চেক-আপ ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার বলে মনে করেন লেলিন চৌধুরী।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত