করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দেশব্যাপী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের এমন খবর জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর, আইএসপিআর। লকডাউন এবং বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টাইন বাস্তবায়নে কাজ করার পাশাপাশি বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করবে তারা।
বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেরিতে বাংলাদেশ সরকার ইতিবাচক ও যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আমরা এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বিগত দিনের মতোই যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবেন বলে আমরা আশা করি।
এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় বিশ্ব যেখানে ইতিহাসের অন্যতম কঠিনতর যুদ্ধ করে যাচ্ছে, সেখানে শুরু থেকেই এখানে আমরা দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ লক্ষ্য করেছি। এখন শেষ সময়ে এসে যাবতীয় তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে। তবুও মন্দের ভালো হিসেবে সরকারের লকডাউন এবং সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
বাংলাদেশে এখন লকডাউন পরিস্থিতি চলছে। গণপরিবহন, দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ, রেল যোগাযোগ বন্ধের ঘোষণা ইতোমধ্যে এসেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগে বন্ধ হলেও সরকারি অফিস বন্ধসহ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা প্রেক্ষাপটে সবাইকে ঘরে থাকার জন্য ছুটি দেওয়া হলেও আমরা দেখছি ভিন্নরূপ। করোনা ছড়ানোর মহোৎসব পড়েছে যেন। যে যেখানে আছেন, সেখানে অবস্থান করার বদলে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন, গিয়েছেন। এতে করোনা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা আরও বেড়ে গেল। এক্ষেত্রে আমাদের সবার সচেতনতা খুব জরুরি বলে আমরা মনে করি।
চীন, ইটালিসহ যেসব দেশ করোনার বিরুদ্ধে ভয়াবহ যুদ্ধ করছে সেখান থেকে সরকারের কৌশল শেখার ছিল। এসব ক্ষেত্রে আগে লকডাউন করে এরপর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে ভালো হতো। সেসব বিতর্ক এখন করে আর লাভ নেই। এখন অবশ্য বিতর্ক আর দোষারোপের সময়ও না। সময় এখন করোনার বিরুদ্ধে সম্মিলিত যুদ্ধের। এজন্য সব পক্ষকেই এখন প্রস্তুত হতে হবে। যুদ্ধক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র ভুল করার সুযোগ নেই। এ যুদ্ধে জনগণকে যেমন স্বতস্ফূর্তভাবে নিয়ম মানতে হবে, তেমনই সরকারকে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য।
করোনার বিরুদ্ধে মানবতার এ যুদ্ধে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।