পেঁয়াজের ঝাঁজ এবার লেগেছে রসুনে। পেঁয়াজের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ করার অজুহাত দেয়া হলেও দেশে আদা-রসুনের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দায়ী করা হচ্ছে চীনকে। সেখানকার করোনা ভাইরাসের কারণে বাণিজ্য বন্ধ থাকায় দাম বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই দু’টি পণ্যের।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা প্রতি কেজি রসুনের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর দেশি রসুনের কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত। রসুনের পাশাপাশি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের আদা।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কাঁঠালবাগান, হাতিরপুল বাজার ঘুরে দামের এই চিত্র দেখা গেছে।
এসব বাজারে আমদানি করা চায়না রসুন কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে এখন তা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে। কেজিতে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে। আর নতুন রসুন (কাঁচা) বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন: অধিকাংশ রসুন ও আদা আসে চীন থেকে। কিন্তু এখন চীনে করোনা ভাইরাসের কারণে আমদানি বন্ধ রয়েছে। তাই দাম বাড়ছে। সামনে আরো বাড়তে পারে বলে তাদের ধারণা।
তবে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
মসলা জাতীয় এই পণ্যটির দাম বেড়েছে যে তার প্রমাণ সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির বাজার দরের তথ্যেও পাওয়া গেছে।
সংস্থাটির ওয়েব সাইটের তথ্যানুযায়ী, আমদানি করা রসুন ১৮০ থেকে ২২০ টাকা আর দেশি রসুন ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক মাস আগেও আমদানি করা রসুনের দাম ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা আর দেশি রসুনের দাম ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। আর ঠিক এক বছর আগে দাম ছিল আরো অনেক কম। ওই সময় দেশি রসুন ৫০ থেকে ৭০ টাকা আর আমদানি করা রসুনের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এই হিসাবে বছরের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়েছে গড়ে প্রায় ১৮০ শতাংশ।
রসুনের সঙ্গে বাড়তি রয়েছে সব ধরনের আদার দামও। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি আদার দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা, দেশি নতুন আদা ১৯০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, মিশরের পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা, বার্মার পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা এবং চায়না পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
আদা-রসুনের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন: আমাদের আদা-রসুনের বড় অংশটা আসে চীন থেকে। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে চীন থেকে আমদানি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দাম বাড়তি।
সরবরাহ কমে গেলে দাম আরো বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর উদ্দিন বলেন: রমজানে যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্যের দাম না বাড়ে সেজন্য আমাদের একটা কৌশলপত্র তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।