উত্তরায় তৃতীয় লিঙ্গের দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১২

আধিপত্য বিস্তার, পূর্বশত্রুতা, হামলা-মামলা, হুমকী ও বিরোধের জের ধরে রাজধানীর উত্তরায় তৃতীয় লিঙ্গের দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানার ৭নং সেক্টর কল্যান সমিতির অফিসের সামনে তৃতীয় লিঙ্গের কচি হিজড়া ও শান্তা-আপন গ্রুপের লোকজনের মধ্যে কয়েক দফা এ মারামারির ঘটনা ঘটে।

কচি গ্রুপের আহতরা হলেন- আইরিন, সিমু, মিম, সৃষ্টি, অন্তরা, কমলা, পায়েল বৃথী ও অপু। বাকীদের নাম জানা যায়নি। আহতদেরকে টঙ্গীস্হ শহীদ আহসান উল্লাহ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

আজ রোববার উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস দ্য সাউথ এশিয়ান টাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও সেক্টর কল্যাণ সমিতির নিরাপত্তা প্রহরী জাকির হোসেন জানান, রোববার বেলা ১১ টার দিকে উত্তরা ৭নং সেক্টর কল্যান সমিতির অফিসের সামনে তৃতীয় লিঙ্গের কচি হিজড়া একটি গ্রুপের লোকজনের ওপর শান্তা-আপন হিজড়া গ্রুপের প্রায় শতাধিক লোক হাইস গাড়িতে করে এসে পরিকল্পিতভাবে লাঠি সোটা নিয়ে কচি গ্রুপের সদস্যদের ওপর হামলা করে। কয়েক দফা হামলা চালানে হয়। এ সময় এক লোক ঘটনার ভিডিও করার চেষ্টা করলে তাকেও মারপিট করা হয়। লোকজন দিকবিদিক দৌড়ে ছুটাছুটি করতে থাকে। এসময় সংঘর্ষ চলাকালে উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির বাসিন্দাদের মধ্যে এক এধরনের আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

এবিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোজাম্মেল জানান, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। কিন্তু হামলাকারীরা পুলিশ দেখে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে কৌশলে গাড়িতে উঠে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে আজ তুরাগের হিজড়া নেত্রী কচি বেগম বিষয়টি নিশ্চিত করে শান্তা ও আপন হিজড়া গ্রুপের ৫০/৬০ জন হিজড়া হাইস গাড়িতে করে এসে আমার গ্রুপের লোকজনের ওপর হামলা ও লুটপাট চালিয়ে নগদ অর্ধ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার ও ১৬টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। তার মধ্যে হিজড়া আইরিন এর নগদ ৩৯ হাজার টাকা ও পৌনে এক ভরি সোনার চেইন, মোবাইল এবং পায়েলের কাছ থেকে নগদ ১৯ হাজার টাকা ও মোবাইল মারধর করে আহত করে সব কিছু ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে জানতে প্রতিপক্ষ গ্রুপের আপন ও শান্তা হিজড়ার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরো জানান, এর আগে ২৫ অক্টোবর উত্তর পশ্চিম থানায় (আপন হিজড়ার স্বামী)
আব্বাস উদ্দীন আশিক নামের এক ব্যক্তি ২ থেকে ৩’শ তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিলেন। আজকের এ ঘটনায় কেউ মামলা করতে চাইলে সেএা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।