পটুয়াখালীর বাউফলে একটি ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষ না থাকায় শিক্ষা কার্যাক্রম ব্যহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকদের পাঠদানে অনিহা, দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকা ও শিক্ষার্থীদর কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের জন্য দিন দিন কমছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, যে কারনে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে শিক্ষাব্যবস্থা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজলার কেশবপুর ফজলুল হক সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মা. ইউনুছ মিয়া প্রায় ৩ বছর ধরে অসুস্থ উল্লেখ করে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি ঢাকায় অবস্থান করলেও নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেখানো হয়। এছাড়া প্রায় ১৬ বছর থেকে তিনি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী এবং সরকারি সুবিধাভােগীদের নিয়ে মাদ্রাসার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যে কারণে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। ওই মাদ্রাসা পরিচালনায় অধ্যক্ষ গত প্রায় দেড় যুগ থেকে ব্যক্তিগত সুবিধা, অতি রাজনীতিকরণ, নিজের আত্মীয় স্বজনকে নিয়ােগ, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে ক্রমশ: অন্ধকারে নিয়ে গেছেন। যা এলাকাবাসীসহ স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ও সচেতনমহলে ক্ষােভের সষ্টি করেছে। ওই মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের পরিবার ও তার স্বজনদের মধ্য ৯ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। মাদ্রাসাটির কাগজ কলমে ৩০জন শিক্ষক ও ৩শত নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেখালেও উপস্থিতির পার্থক্য আকাশ পাতাল।
এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সংবাদকর্মীদের বাঁধা দেন সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসায় কর্মরত তােফাজ্জল হােসেন নামের এক শিক্ষক। তার বাড়ী বাউফল পৌর শহরে এবং তিনি বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতা।
ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক আইয়ুব অকপটে স্বীকার করে বলেন, কিছু অনিয়ম থাকতে পারে তবে বিষয়টি সরল নজর দয়া করে দেখুন। ওই সময়ে মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রভাষক সােলায়মান তিনি অধ্যক্ষের খাতায় পিছনের অনুপস্থিতির স্বাক্ষর করেন যা গােপন ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। ছাত্র উপস্থিতির বিষয়ে কথা বলায় তারা এড়িয়ে যান। আর উপাধ্যক্ষ পদ শূণ্য থাকায় প্রভাষক সােলায়মান সিনিয়র শিক্ষককে সুবিধা মতাে দায়িত্ব দিয়ে চলছে মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতন উত্তােলনের কার্যক্রম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আমরা আপনাদের কিছু বলে দিলে তারা (শিক্ষকরা) আমাদের বিপদে ফেলবে। তবে সব শিক্ষক প্রতিদিন আসেন না। আসলেও তারা প্রায়দিনই ক্লাস করেন না। ওই সময়ে এক শিক্ষার্থী প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, মাদ্রসার সকল কার্যক্রম যদি আমাদের করতে হয় তবে কি তাদের দায়িত্ব নেই?
স্থানীয় বেগম নামে এক অভিভাবক জানান, দুই একজন শিক্ষক ভালো আছেন, তবে ক্লাস হয়না, তাই আমার ছেলেকে অন্যত্র নিয়ে ভর্তি করেছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, আমার নাতী অন্যত্র নিয়ে ভর্তি করেছি অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কারনে।
অভিযােগের বিষয়ে অধ্যক্ষ জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযােগ সত্য নয়। তবে আত্মীয়করণ ও রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়ােগের বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।
প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাে. বশির গাজী জানান, এ বিষয়ে তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। অভিযােগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পটুয়াখালী যাদব সরকার বলেন, আমি কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।