হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর পরবর্তী আমীর কে হবেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কারও নাম প্রকাশ্যে আসেনি। তবে শিগগিরই আমীর নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি শুরু হয়ে যেতে পারে বলে অভাস মিলেছে। আর তা হবে কাউন্সিলের মাধ্যমে।
সংগঠনটির মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী জানিয়েছেন, কাউন্সিলের মাধ্যমেই আল্লামা শফীর উত্তরসূরী নির্ধারণ করা হবে।
শুক্রবার মধ্যরাতে হেফাজতের প্রধান কার্যালয় হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। শুরু থেকেই এর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে হাটহাজারী মাদ্রাসা।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে আল্লামা শফী সংগঠনটির আমীর ও একই মাদ্রাসার শিক্ষক জুনায়েদ বাবুনগরী মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
২০১১ সালে নারী উন্নয়ন নীতির বিরোধিতা করে প্রথম নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয় হেফাজত। এরপর ২০১৩ সালে ইসলাম ও রাসুলকে নিয়ে কটুক্তিকারী ব্লগারদের শাস্তিসহ ১৩ দফা দাবি দিয়ে দেশজুড়ে আলোচনায় আসে সংগঠনটি।
একই বছরের ৫ মে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখী লংমার্চ করে শাপলা চত্তরে বড় ধরনের সমাবেশ করে। এরপর থেকে হেফাজতে ইসলাম নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন হেফাজত আমীর আল্লামা আহমদ শফী।
তার মৃত্যুর পর সংগঠনের কার্যক্রমে কোন প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুতে সংগঠনে নেতৃত্বের অভাবতো কিছু হবেই। ওনার মতো তো আর মানুষ পাওয়া যাবে না। আমার দায়িত্ব হলো এখন কাউন্সিল ডাকা। কাউন্সিল যে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন আমীর নির্বাচন করা হবে। একা কেউ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। ’
হাটহাজারী মাদ্রাসায় গত কয়েক দিন ধরে চলা ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্তা নেই দাবি করে বাবুনগরী বলেন, ‘এসব কারা করছে, কেন করছে আমি জানি না। তাদেরকে আমি চিনিও না।’
ওই আন্দোলনের এক পর্যায়ে আল্লামা শফী বৃহস্পতিবার রাতে মাদ্রাসাটির মহাপরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন বরেণ্য এই আলেম।
আন্দোলনের মুখে তার আগের দিন মাদ্রাসার শিক্ষকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল আল্লামা শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে।
ছাত্রদের আন্দোলনরত অংশটি হেফাজত মহাসচিব বাবুনগরীর অনুসারী বলে প্রচার রয়েছে। হাটহাজারীতে আল্লামা শফীর নামাজে জানাজায়ও আনাস মাদানিকে লাঞ্ছিত করা হয়।