রেমিট্যান্স আয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ: প্রথমবারের মতো ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স আয়ে অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে এসে বৈধ চ্যানেলে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০.০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, জুন মাসের প্রথম ২৮ দিনেই দেশে এসেছে প্রায় ২.৫৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স। এই প্রবাহের ফলে অর্থবছরের মোট প্রবাসী আয়ের অঙ্ক ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩.২৮ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান,

হুন্ডি রোধে সরকারের কঠোর নজরদারি এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করার ফলে বৈধ পথে অর্থপ্রদানে বড় সাফল্য এসেছে।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চলতি বছর ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রবাসীদের পাঠানো বাড়তি অর্থ এবং সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ এই সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

মাসভিত্তিক পরিসংখ্যান (২০২৪–২৫ অর্থবছর) সময়কাল রেমিট্যান্স (ডলার) জুলাই–মে ২৭.৫ বিলিয়ন, জুন (২৮ দিন) ২.৫৪ বিলিয়ন, মোট (২৮ জুন পর্যন্ত) ৩০.০৪ বিলিয়ন।

অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব আহমেদ বলেন,

রেমিট্যান্স বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান উৎস। এই প্রবাহ রিজার্ভ স্থিতিশীল করতে সাহায্য করেছে এবং টাকার মানকে চাপমুক্ত রেখেছে।”

📈 কী কারণে এই সাফল্য?
  • উৎসবকে ঘিরে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ বৃদ্ধি।
  • বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহব্যবস্থা।
  • হুন্ডি রোধে কড়াকড়ি।
  • ব্যাংকিং প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল সহজতা।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ২৮ জুন পর্যন্ত বৈদেশিক রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৬ বিলিয়ন ডলারে।

 

রেমিট্যান্স প্রবাহে এই ঐতিহাসিক সাফল্য বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি আশাব্যঞ্জক বার্তা নিয়ে এসেছে। প্রবাসী শ্রমিকদের অবদানে অর্থনীতি যেমন চাঙা হচ্ছে, তেমনি বৈধ পথে আয় প্রবাহিত হওয়ায় দেশের ব্যাংকিং খাতও শক্তিশালী হচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে প্রবাসীদের সহযোগিতা এবং সরকারি নীতিমালার স্থিতিশীলতা জরুরি।