রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে তাসলিমা বেগম রেনুকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) মতিঝিল বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম।
অভিযোগপত্রের ১৫ আসামি হলেন- মো. ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় হোসেন মোল্লা (২০), রিয়া বেগম ওরফে ময়না বেগম (২৯), মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ওরফে আজাদ মণ্ডল (৫০), মোহাম্মদ কামাল হোসেন (৪০), মোহাম্মদ শাহিন (৩২), মো. বাচ্চু মিয়া (৩৬), মো. বাপ্পী ওরফে শহিদুল ইসলাম (২১), মো. মুরাদ মিয়া (২৬), মো. সোহেল রানা (৩০), আসাদুল ইসলাম (২২), মো. বিল্লাল মোল্লা (৩২), মো. রাজু ওরফে রুম্মান হোসেন (২৩), মো. মহিউদ্দিন (১৮), মো. জাফর হোসেন পাটোয়ারী (১৭), ওয়াসিম ওরফে মো. অসীম আহম্মদ (১৪)। এর মধ্যে আসামি মো. মহিউদ্দিন পলাতক রয়েছেন। বাকি ১৪ আসামি কারাগারে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২০ জুলাই সকালে উত্তর-পূর্ব বাড্ডার বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে রেনুকে হত্যা করেন স্থানীয়রা। স্কুলটিতে নিজের চার বছরের মেয়ের ভর্তি করানোর জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন তাসলিমা।
এ সময় স্কুলের গেটে তাসলিমার পরিচয় জানতে চান সেখানে অবস্থান করা কয়েকজন অভিভাবক। পরে তাকে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে নিয়ে গেলে কে বা কারা এলাকায় ছড়িয়ে দেয়, স্কুলে একজন ছেলেধরাকে আটক করা হয়েছে। এরপর স্থানীয় কয়েকশ মানুষ স্কুলের গেট ভেঙে তাসলিমাকে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে এনে পেটাতে শুরু করে। পুলিশ তাসলিমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত তাসলিমার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে। রাজধানীর মহাখালীতে চার বছরের মেয়ে ও মাকে নিয়ে থাকতেন তিনি। দুই বছর আগে স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। তার ১১ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। ছেলেটি বাড্ডায় বাবার সঙ্গে থাকে।
এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় ভাগ্নে নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পরে প্রধান আসামি হৃদয়, বাচ্চু, মো. বাপ্পী, মো. শাহীন, রিয়া খাতুনসহ একাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন।