
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ড আইন বাতিল বা রোহিত করাসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি)।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক ‘সর্বস্তরে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও ৯ দফা দাবি আদায়ে’ আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে তারা বলেন, পৃথিবীর প্রায় সকল উন্নত দেশে ইতিমধ্যে মৃত্যুদণ্ড আইনটি বাতিল করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড আইনটি মানবতা বিরোধী একটি নিষ্ঠুর আইন। বাংলাদেশের এই আইনটি বাতিল করতে হবে।
বিএইচআরসি এর অন্যান্য দাবিগুলো হল- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই পৃথক পৃথক একাধিক নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা এবং মানবাধিকার কর্মী হত্যা, নিখোঁজ (গুম) এবং আহতদের নামের তালিকা তৈরি করতে হবে। নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। সরকারকে অবশ্যই নির্যাতন কারীদের গ্রেফতার ও আইনে সোপর্দ করতে হবে; বর্তমান জাতীয় মানবাধিকার কমিশন- এনএইচআরসি’ কে ভেঙে একটি উচ্চ পুনর্গঠন কমিটি গঠন পূর্বক নতুন ভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইন প্রনোয়ন করতে হবে; এনএইচআরসি’কে অবশ্যই সরকারের দালালি করার কাজে নিয়োজিত করা যাবে না। একটি নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ দিতে হবে; বিগত স্বৈরাচার সরকার এবং কামাল উদ্দিন বাহিনীর হাতে নির্যাতিত মানবাধিকার কর্মী যথাক্রমে নিহত, নিখোঁজ এবং আহতদের উপযুক্ত ক্ষতি পূরণ প্রদান করতে হবে; জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সরাসরি হস্তক্ষেপে ও চাপ দিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ৩টি রেজিস্ট্রেশন স্থগিত রয়েছে যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। স্থগিতকৃত নিবন্ধনগুলো পুনরায় চালু করার লক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে স্থগিত রেজিস্ট্রেশনগুলো পূর্ণবহাল করতে হবে; স্বৈরাচার সরকারের দোসর সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারি এবং ফরমায়িশি বিচাপতি ও বিচারকদের তালিকা তৈরি করে অবিলম্বে তাদের অপসারণ করতে হবে; যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আইন সংশোধন করতে হবে; প্রতিটি নাগরিক ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে; এটা নাগরিকের মানবাধিকার। বিনা বিচারে বছরের পর বছর কারাগারে আটক রাখা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। তাই ৯০ কর্ম দিবসের মধ্যে বিচার কার্য সম্পূর্ণ করতে হবে।
এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয় আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে সরকার দাবি না মানলে ৪ সপ্তাহ পর বিএইচআরসি থেকে সারা দেশ ও বিদেশের শাখাগুলো একযুগে অব্যাহতভাবে নিজ নিজ এলাকায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করবে। আন্দোলনের প্রাথমিক কর্মসূচিতে থাকবে মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট এবং স্মারকলিপি প্রদান।
মানববন্ধনে আয়োজক সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী রেজাউল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ড. সাইফুল ইসলাম দিলদারসহ অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।