করোনা আতঙ্কে কাঁটা গোটা দেশ। মারণ চীনা ভাইরাস রুখতে কী কী সতর্কতা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে ভেবেচিন্তে দিশাহারা সাধারণ মানুষ। অনেকেই বলছেন, মাস্কই নাকি করোনা রুখতে ব্রহ্মাস্ত্রের মতো কাজ করতে পারে। সংক্রমণের ভয়ে সারা বিশ্বেই ইদানীং মাস্ক পরছেন মানুষ। সম্প্রতি বাড়ির বাইরে বেরলেই মাস্ক পরে বেরতে বলছে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক। তার মাঝে বহু ফ্যাশনিস্তা এখন এই মাস্ককেই একটি অ্যাকসেসরিতে পরিণত করছেন! বিশ্ব জুড়ে বহু ফ্যাশন হাউজ এমনকী, রংচংয়ে মাস্ক তৈরির প্রতিযোগিতায়ও নেমেছেন।
এন নাইন্টি ফাইভ মাস্ক: ১৯৫৮ সালে ডিজাইনার সারা লিটল টার্নবুল ‘থ্রি এম’ কোম্পানিতে একটি প্রেজেন্টেশন দেন, যাতে তিনি নন উভেন প্রোডাক্টের দিকে কোম্পানির ব্যবসা প্রসারিত করতে বলেন। তিনি একশটি পণ্যের ধারণা দেন এবং যার মধ্য থেকে তাকে মোলডেড ব্রা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে টার্নবুলকে পরিবারের অসুস্থ সদস্যদের দেখাশোনা করার জন্য হাসপাতালে প্রচুর সময় ব্যয় করতে হয়। কিছুদিনের মধ্যে তিনজন কাছের মানুষকে হারান তিনি। এই দুঃখবোধ থেকে বের হয়ে ‘বাবল’ সার্জিক্যাল মাস্ক নামে নতুন একটি মাস্ক উদ্ভাবন করেন টার্নবুল, যা দেখতে ছিল ব্রা কাপের মতো।
১৯৬১ সালে ‘বাবল’ সার্জিক্যাল মাস্কটি থ্রি এম কোম্পানি বাজারে ছাড়ে। যখন কোম্পানি বুঝতে পারল এই মাস্কটি জীবাণু প্রতিরোধ করতে পারবে না, তখন এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘ডাস্ট’ মাস্ক।
১৯৭০ সালে খনি দপ্তর এবং জাতীয় পেশাগত সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান একবার ব্যবহার করা যায় এমন রেস্পিরেটরের মানদণ্ড তৈরি করে। সর্বপ্রথম থ্রি এম কোম্পানি এন নাইন্টি ফাইভ মাস্ক তৈরি করে, যা ১৯৭২ সালের ২৫ মে অনুমোদন পায়।
এন নাইন্টি ফাইভ মাস্ক মূলত কারখানায় ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার সাই এন নাইন্টি ফাইভ মাস্কে ভাইরাস প্রতিরোধী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন এবং ১৯৯৫ সালে এটি প্যাটেন্ট করান। এরপর থেকে এন নাইন্টি ফাইভ মাস্ক স্বাস্থ্যখাতে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
‘এর নামকরণের কারণ
এন: ‘নট রেজিস্ট্যান্ট টু অয়েল’ বোঝাতে এন অক্ষরটি ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ এই মাস্কটি কেবল বস্তু কণা প্রতিরোধ করবে, কোনো তরল নয়।
নাইন্টি ফাইভ: এই মাস্ক বাতাসে ভাসমান ৯৫ শতাংশ কণাকে ছাঁকতে পারে বিধায় নামকরণে ‘নাইন্টি ফাইভ’ ব্যবহার করা হয়েছে।
মানুষ যখন মাস্ক ব্যবহার করা শুরু করে তখন বাতাসে ভাসমান ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া যে মানুষকে অসুস্থ করতে পারে এই সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই ছিল না। এই মতটি প্রকাশ করেন ক্রিসটোস লিনটেরিস, যিনি মেডিক্যাল মাস্কের ইতিহাস বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ।
১৭২০ সালে মারসেয়ের আঁকা চিত্র থেকে দেখা যায়, কবর খননকারী এবং অন্যান্য লোকজন যারা মরদেহ ঘাঁটাঘাঁটি করত, তারা কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখত। মারসেয় তখন বিউবোনিক প্লেগের প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত ছিল। লিনটেরিসের মতে, লোকজন তখন ছোঁয়াচে রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য কাপড় দিয়ে মুখ এবং নাক ঢাকত না। বরং তাদের বিশ্বাস ছিল, রোগসমূহ যেমন, প্লেগ ছিল দুর্গন্ধ যা ভূপৃষ্ঠ থেকে নিঃসৃত হয়। এই কারণেই দুর্গন্ধ থেকে বাঁচার জন্য তারা কাপড় দিয়ে মুখ ও নাক ঢাকত।
এই দুর্গন্ধ তত্ত্বের ফলে ১৬০০ সালে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে একধরনের প্লেগ মাস্ক ব্যবহার করা হত। এই প্লেগ মাস্ক মূলত ব্যবহার করত ডাক্তাররা, যারা প্লেগ শনাক্ত করতেন। তখনকার ডাক্তাররা একটি লাঠি দিয়ে মৃদু টোকা দিয়ে সংক্রমিত রোগীদের শনাক্ত করতেন। এই দীর্ঘকায় মাস্কগুলো ছিল বড় পাখির ঠোঁটের মতো। মাস্কগুলোর শেষ প্রান্তে দুটি নাসারন্ধ্রের প্রবেশদ্বার ছিল যা সুগন্ধি দিয়ে পূর্ণ করা যেত। লোকজন মনে করত, প্লেগের দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে তারা প্লেগ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে। লিনটেরিস বলেন, “মানুষের এই ধারণা উনিশ শতক শুরুর দিক পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল।”
১৮৭০ সালের শেষ দিকে বিজ্ঞানীরা ব্যাক্টেরিয়া সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। অণুজীব বিদ্যার বিকাশের সাথে দুর্গন্ধ তত্ত্বের বিলুপ্তি ঘটে।
সার্জিক্যাল মাস্ক
১৮৯৭ সালে ডাক্তাররা সর্বপ্রথম সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করা শুরু করেন। কিন্তু এই সার্জিক্যাল মাস্ক বাতাসে ভাসমান কণা ছাঁকার কাজে তখন ব্যবহার হত না। তারা এটি ব্যবহার করতেন যাতে সার্জারি চলাকালে নিজেদের হাঁচি-কাশির ফলে সৃষ্ট কোনো তরলের ফোঁটা রোগীর ক্ষতে না পড়ে ।
আধুনিক রেস্পিরেটর
১৯১০ সালের শরৎকালে মাঞ্চুরিয়াতে প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটে যা বর্তমানে উত্তর চীন নামে পরিচিত। লক্ষণ দেখা দেওয়ার ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শতভাগ রোগী মারা যেত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য চীনের রাজকীয় আদালত একজন তরুণ ডাক্তারকে নিয়োগ করেন যার নাম লিয়েন তেহ উু। ক্যামব্রিজ থেকে মেডিসিনের উপর পড়াশোনা করেন তিনি।
উু প্লেগ আক্রান্ত একজন রোগীর ময়নাতদন্ত করে নির্ণয় করেন, প্লেগ মাছি দ্বারা ছড়ায় না, ছড়ায় বাতাসের মাধ্যমে। তিনি পাশ্চাত্য দুনিয়ায় যে ধরনের সার্জারি মাস্ক দেখেছিলেন তার চেয়ে আরও শক্ত প্রকৃতির মাস্ক তৈরি করেন। সূতি বস্ত্র এবং গজ দিয়ে তিনি এই মাস্কটি তৈরি করেন যা খুব দৃঢ়ভাবে মুখের চারপাশ ঢাকতে পারত। শ্বাসগ্রহণ প্রক্রিয়া বিশোধনের জন্য কয়েক স্তরের কাপড়ও যোগ করা হয়েছিল তার মাস্কটিতে। এটি ছিল একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার, কিন্তু কয়েকজন ডাক্তার এর কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।
তৎকালীন সময়ে জেরাল্ড মেনসি নামে একজন বিখ্যাত ফরাসি ডাক্তার ছিলেন। উু তার তত্ত্ব মেনসিকে ব্যাখ্যা করে বলেন, “প্লেগ বায়ুবাহিত এবং নিউমোনিয়াঘটিত রোগ।” মেনসি উুর তত্ত্ব শুনে তাকে বেশ অপমান করেন। শুধু তা-ই না, নিজেকে সঠিক প্রমাণ করতে উুর উদ্ভাবিত মাস্ক না পরে হাসপাতালে থাকা একজন প্লেগ রোগীর কাছে যান তিনি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে মাত্র দু’দিনের মধ্যে এই প্লেগে আক্রান্ত হয়েই মারা যান মেনসি। এই বিখ্যাত ঘটনাটি তখন লোকমুখে বেশ ছড়িয়ে পড়ে।
লিনটেরিস বলেন, “ওই অঞ্চলের অনেক ডাক্তার খুব দ্রুততার সাথে নিজস্ব মাস্ক তৈরি করছিল। কিন্তু তাদের তৈরি মাস্ক ছিল খুব অদ্ভুত ধরনের ছিল।” উুর তৈরি মাস্ক ব্যাকটেরিয়া থেকে মাস্ক ব্যবহারকারীদের রক্ষা করার পরীক্ষায় সফলতার সাথে পাশ করল। লিনটেরিস আরও বলেন, “উুর তৈরি মাস্কের ডিজাইন খুবই ভালো ছিল। খুব সস্তা এবং সহজলভ্য বস্তু দিয়ে এই মাস্ক তৈরি করা যেত।” ১৯১১ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই মাস্ক তৈরি শতগুণ বেড়ে গেল। স্বাস্থ্যকর্মী, সৈনিকসহ সাধারণ লোকজনও এই মাস্ক পরা শুরু করল। ফলে প্লেগের দ্রুত বিস্তার ঠেকানো সম্ভব হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রে উুর মাস্ক নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ১৯১৮ সালে যখন স্প্যানিশ ফ্লুর প্রাদুর্ভাব ঘটে, তখন বিভিন্ন কোম্পানি উুর মাস্কের আদলে মাস্ক তৈরি শুরু করে।
গ্যাস মাস্ক
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় গ্যাস মাস্ক তৈরি করা হয় যা খনির শ্রমিকরাও ব্যবহার শুরু করে। এগুলো পুনরায় ব্যবহার করা গেলেও ফাইবারগ্লাস ফিল্টার এবং ভারী রাবারের বস্তু থাকার কারণে ব্যবহারকারীদের কাছে গ্যাস মাস্ক খুবই অস্বস্তিকর এবং ভারী লাগত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বর্তমানে বলছে, শুধুমাত্র দুই ধরণের মানুষের সুরক্ষা মাস্ক পরা উচিত। তারা হলেন: ১) যারা অসুস্থ, যাদের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দিয়েছে ২) যাদের করোনাভাইরাস হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের যারা দেখভাল করছেন
সাধারণ জনগণের জন্য মাস্ক ব্যবহারের সুপারিশ করছেন না। তার কারণ?১) পরা বা খোলার সময় সেগুলো অন্য মানুষের কাশি এবং হাঁচির কারণে সেগুলো বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে।
সংক্রমিত কেউ যখন কথা বলেন, কাশি দেন বা হাঁচি দেন, তখন খুব ক্ষুদ্র আকারে করোনাভাইরাস বাতাসে ভেসে বেড়াতে পারে। সরাসরি স্পর্শ বা বিষাক্ত কোন বস্তুর মাধ্যমে সেগুলো চোখ, নাক ও মুখ দিয়ে সেগুলো শরীরের ভেতর প্রবেশ করতে পারে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন গবেষণা করে বোঝার চেষ্টা করছে যে, সাধারণ মানুষজনও মাস্ক ব্যবহার করে উপকার পায় কিনা। তারা পরীক্ষা করে দেখছেন যে, ভাইরাসটির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাওয়া যায় কিনা।
ঘরে বানানো মাস্ক কতটুকু কাজ করে?
যুক্তরাষ্ট্রের সরকার আমেরিকান নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছে যে, করোনাভাইরাস উপদ্রুত এলাকাগুলোয় বাইরে গেলে তারা যেন মাস্ক ব্যবহার করেন অথবা তাদের মুখমণ্ডল স্কার্ফ দিয়ে ঢেকে রাখেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাদুর্ভাবের প্রধান কেন্দ্র, নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের এর আগেই এই পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাসিও বলেছেন,”এটা একটা স্কার্ফ হতে পারে। আপনার বাড়িতে তৈরি কিছু একটা হতে পারে।”তবে এ ধরণের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাজ্য। স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে মেডিকেল ও বৈজ্ঞানিক পরামর্শ অনুসরণ করছে সরকার।
ইংল্যান্ডের ডেপুটি চীফ মেডিকেল অফিসার প্রফেসর জোনাথন ভ্যান টম বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন না যে, এসব মাস্ক পরে সুস্থ মানুষজনের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যাচ্ছে।
পুনরায় ব্যবহার উপযোগী কাপড়ের মাস্কগুলোর ব্যবহারও স্বাস্থ্যসম্মত নয় এবং সেগুলো বরং সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়িতে দিতে পারে বলে বলছেন ইউরোপিয়ান বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই কাপড়ের ভেতর দিয়ে ভাইরাস চলে যাওয়ার বড় সম্ভাবনা রয়েছে। তারপরেও ঘরে বসে কীভাবে মাস্ক তৈরি করতে হয়, এ নিয়ে অনলাইনে অসংখ্য পরামর্শ দেখতে পাওয়া যায়।
কিন্তু ঘরে বানানো মাস্কের মানের বিষয়টি কোন পর্যালোচনা বা যাচাই বাছাই করা হয় না। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বানানো মাস্কগুলোকে কিছু নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে তৈরি করতে হয়।
কোন ধরণের মাস্ক সবচেয়ে ভালো?
হাসপাতালে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরণের মাস্ক বিভিন্ন ধরণের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা দেয় যে মাস্কটি, সেটি হলো এফএফপি৩ অথবা এন৯৫ অথবা এফএফপি২, যেগুলোয় একটি বাতাস পরিশোধনের যন্ত্র থাকে।
জনসাধারণের জন্য এসব মাস্ক ব্যবহারের সুপারিশ করেন না বিশেষজ্ঞরা। এগুলো হচ্ছে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের জন্য, যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসেন এবং বাতাসে ভেসে থাকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
এরা হচ্ছেন সেই সব চিকিৎসক, সেবিকা বা স্বাস্থ্যকর্মী, যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা সম্ভাব্য রোগীদের এক মিটারের মধ্যে থাকেন। এই কর্মীরা হাসপাতাল, প্রাথমিক সেবা, অ্যাম্বুলেন্স অথবা বাড়িতে সেবাদানকারীরাও হতে পারেন।
অন্য যে স্বাস্থ্য-কর্মীরা কম ঝুঁকিতে থাকেন, তারা সাজিক্যাল মাস্ক পরতে পারেন। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আর কি সুরক্ষা দিতে পারে?
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ পরামর্শ দিয়েছে যে, করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে আসতে হতে পারে, এমন সব ক্ষেত্রে হাতমোজা এবং অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করা উচিত।
বিশেষ করে যেসব স্বাস্থ্য কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন, তাদের শুধুমাত্র অ্যাপ্রন, মাস্ক, হাতমোজা ও চশমার বাইরেও সব ধরণের সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে।কিন্তু সাধারণ জনগণকে হাতমোজা বা অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়নি।
করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ যেসব পরামর্শ দিয়েছে, তা হলো:১)বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর সাবান ও পানি দিয়ে ঘনঘন এবং অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। ২)সাবান ও পানি পাওয়া না গেলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। ৩)কাশি বা হাঁচি দিলে হাত দেয়ার বদলে একটি টিস্যু অথবা কনুই ব্যবহার করা উচিত। ৪)কাশি বা হাঁচি দেয়ার পরেই ব্যবহৃত টিস্যু ময়লার বাক্সে ফেলে দিতে হবে এবং হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। ৫) হাত পরিষ্কার না থাকলে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা যাবে না।
বহু বছর ধরে স্বাস্থ্যরক্ষা ও ফ্যাশনের স্বার্থে পূর্ব এশিয়ার বহু দেশের মানুষই প্রতিনিয়ত মাস্ক পরেন। এবার কি এই মাস্ক-ম্যানিয়া সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে? উত্তর দেবে কেবল সময়। সেই দিন হয়তো আর দূরে নেই যখন মডেল সুন্দরীরা নিয়মিত মাস্ক পরে ক্যাটওয়াক করবেন!