মানিকগঞ্জে কারা হিসাবরক্ষক হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ২

 

মোমিনুর রহমান ,মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি.

ঈদ উল আযহার আগের রাতে গাজীপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাবরক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম খান হত্যা মমালার রহস্য উদঘাটন করে আলামত উদ্ধারসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস বিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার শায়েস্তা ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের আনিস শেখের ছেলে মিস্টার আলী (২৩) ও একই গ্রামের মো. এখলাছ শেখের ছেলে মো. শাহীন। তারা দুজন আপন চাচাতো ভাই। পেশায় বাসচালক ও হেলপার।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, আসামি মিস্টার আলী শুকতারা পরিবহণ নামের বাসের চালক। আর শাহীন ছিলেন বাসের সহকারী (হেলপার)। তারা দুজনসহ আরও তিনজন মিলে বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে ডাকাতি করবে বলে পরিকল্পনা করে। তারা ডাকাতির পরিকল্পনা নিয়েই রোববার সন্ধ্যার পরে গাবতলী থেকে যাত্রী ওঠান বাসে । এরপর বাসটি নবীনগর এলাকায় আসলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাবরক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম খান মানিকগঞ্জে আসার জন্য যাত্রী হিসেবে উঠেন বাসটিতে।বাসটি মানিকগঞ্জে পৌঁছার আগেই অনেক যাত্রী তাদের গন্তব্যে আসায় নেমে যায়। এ সময় বাসে যাত্রী থাকে মো. শহিদুল ইসলামসহ আরও একজন। পরে তারা এই দুই যাত্রীর উপরে হামলা চালিয়ে টাকা-মোবাইল ফোন ডাকাতি করে। এর পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের জাগীর ব্রিজে উঠার আগে বাস থেকে অজ্ঞাত ওই যাত্রীকে লাথি মেরে ফেলে দেয় এবং কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাবরক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম খানকে ব্রিজ উঠার পরে বাস থেকে ব্রিজের নিচে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বাসে থাকা অজ্ঞাত ওই যাত্রীর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে পরিচয় পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।

এই হত্যাকান্ডে জড়িত আরও ৩ জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্র্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাবিল হোসেন বলেন, ঈদের দিন সকালে জাগীর ব্রিজের নিচ থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাবরক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম খানের মৃতদেহ উদ্ধার করি। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বড় মেয়ে মাহিশা মালিহা বিভা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।গত শনিবার দিনগত রাতে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে মো. শহিদুল ইসলাম খানকে ব্রিজ থেকে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন।

উল্লেখ্য, গত ১৭ই জুন সোমবার সকাল ৮ টার দিকে জরুরী সহায়তা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ধলেশ্বরী সেতুর নিচে পশ্চিম পাশের ৪ নম্বর পিলারের কাছ থেকে শহিদুল ইসলামের মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাবরক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম খানের বাড়ি সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার ভাজনদাসগাথী এলাকায়। তিনি মানিকগঞ্জ কারাগারে চাকরি করতেন এবং এই শহরেই পরিবার নিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতেন। পরে বদলি হয়ে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার,গাজীপুরে যান তিনি, কিন্তু তার পরিবার মানিকগঞ্জেই থাকতেন। সেই কারণে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে মানিকগঞ্জে আসছিলেন তিনি।