আব্দুর রহমান নোমান: ভোলার বোরহানউদ্দিনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় বড় মানিকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দারের চাল চুরির বিরুদ্ধে সংবাদ করায় এক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ওই চেয়ারম্যান ও তার ছেলে নাবিল হায়দার সাংবাদিক সাগর চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টাসহ তাকে বেধড়ক মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের ছেলে নাবিল হায়দারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বোরহানউদ্দিন থানার ওসি প্রিয়দেশ নিউজকে নিশ্চিত করেছেন। বুধবার দুপুর ১টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ওসি জানিয়েছেন।
জানা যায়, চাল চুরির সংবাদ করায় জসিম হায়দার ও নাবিল হায়দার এ নিজেদের বক্তব্য জানাতে সাংবাদিক সাগর চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে মারধর করেন। পরে ওই ভিডিও তীব্র সমালোচনাসহ ভাইরাল হয়ে যায়।
চেয়ারম্যানের চাল চুরির সংবাদের জেরে মারধরের শিকার ওই সাংবাদিক এখন ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সেখানে নাক-কান-গলা ও চোখের চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি।
হামলার শিকার সাংবাদিক সাগর চৌধুরী বলেন: করোনার সাধারণ ছুটির আগে আমি বাড়িতে আসি। এরপর শুনতে পাই স্থানীয় জেলেদের জন্য সরকারি বরাদ্দের চাল অনেক কম করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল অন্যত্র সরিয়ে নিতে দেখার পর বিষয়টি আমি সংবাদ করি। এরই অংশ হিসেবে বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানাই। তিনি হয়তো চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে শোকজ বা জানাতে পারেন।
‘এরপর থেকেই ওই চেয়ারম্যান ও তার ছেলে আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি দিতে থাকে। একপর্যায়ে সংবাদের বিষয়ে তারা নিজেদের বক্তব্য জানাবেন বলে জানান। এজন্য আমাকে তাদের সঙ্গে দেখা করতে বলেন। আমি তাদের সাথে দেখা করতে গেলে চেয়ারম্যান ও তার ছেলে অস্ত্র দিয়ে আমাকে অস্ত্র দিয়ে আমাকে মারধর করতে থাকেন। চোখ উপড়ে ফেলারও চেষ্টা করে তারা। পরে সেখানে মানুষজন জড়ো হয়ে গেলে আমার বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির অপবাদ দেয়’, বলেন হামলার শিকার সাংবাদিক।
তিনি জানান: করোনার সাধারণ ছুটিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা বা বরিশাল যেতে পারছি না এ মুহূর্তে। এখানে নাক-কান-গলা ও চোখের চিকিৎসক নেই। এজন্য যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছি না। ডান কানে আঘাতের কারণে রক্তক্ষরণ হয়েছে। চোখেও মারাত্মক জখম করেছে তারা।
বোরহানউদ্দিন থানার ওসি জানান: মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ ঘটনায় আমরা লিখিত অভিযোগ পাই। এরপর থেকেই নাবিল হায়দারসহ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাবিল হায়দারকে বুধবার দুপুর একটার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দারের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সেই সাংবাদিকের মুখে হামলার বর্ণনা: