সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে মহামারী করোনায় জীবন উৎসর্গকারী ১০৭ পুলিশ সদস্যকে দেওয়া হচ্ছে মরণোত্তর বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)।
সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রাণঘাতী করোনায় জীবন উৎসর্গকারী ১০৭ পুলিশ সদস্যকে দেওয়া হচ্ছে মরণোত্তর বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ কে এইচ এম কামরুল আহসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, করোনার ভয়াবহতার সময় পুলিশ সদস্যরা নিজেদের সুরক্ষার কথা চিন্তা না করে আগে সেবা দিয়েছেন। পুলিশকে সারাবিশ্বের মতো আমাদের দেশেও ফ্রন্টলাইনার হিসেবে কাজ করতে হয়েছে। করোনাকালে দেশ ও জনগণের কল্যাণে বাংলাদেশ পুলিশের ১০৭ জন গর্বিত সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ হাজারের বেশি সদস্য। আক্রান্তরা সুস্থ হয়েই দেশ ও জনগণের কল্যাণে আবার নিজেদের নিয়োজিত করেছেন।
বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের প্রতি বছর অসীম বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পদক দেওয়া হয়। প্রতি বছর পুলিশ সপ্তাহের বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। যারা এ পদকে ভূষিত হন তাদের নামের শেষে বিপিএম উপাধি যুক্ত হয়।
কিন্তু এ বছর করোনায় জীবন উৎসর্গকারী ১০৭ পুলিশ সদস্যকেও এ পদকে ভূষিত করা হয়। তাদের মধ্যে পুলিশ সুপার একজন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দুজন, ইনস্পেক্টর ১৪, এসআই ১৮, এএসআই ৮, নায়েক ১, কনস্টেবল ৫৩, সিভিল ৩ ও র্যাব ৭। করোনাকালে দেশ ও জনগণের কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করায় ১০৭ গর্বিত সদস্যকে মরণোত্তর পদকে ভূষিত করা হবে।
করোনা মহামারির কারণে গত বছর পুলিশ সপ্তাহ হয়নি। ২০২১ সালের শুরুতে পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানটির জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালিয়েছিল পুলিশ সদরদপ্তর। পুলিশ সপ্তাহ না হওয়ায় পুলিশের সর্বোচ্চ পুরস্কার দেওয়া হয়নি এ বছর। তবে করোনার প্রকোপ কমে আসায় নতুন বছরে দেওয়া হচ্ছে পুলিশের সর্বোচ্চ পুরস্কার বিপিএম।
চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত হবে পুলিশ সপ্তাহ। এ সময় জীবন উৎসর্গকারী ১০৭ জন গর্বিত সদস্যকে সেবা, সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য মরণোত্তর বিপিএম দেওয়া হবে।
সেবা, সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য ২০২০ সালে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম) পান ১১৮ জন। ২০১৯ সালে ৩৪৯ জন পুলিশ সদস্যকে বিপিএম-পিপিএম পদক দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে যথাক্রমে ২০১৮ সালে ১৮২ জন, ২০১৭ সালে ১৩২, ২০১৬ সালে ১২২, ২০১৫ সালে ৮৬ জন কর্মকর্তা বিপিএম-পিপিএম পদক পেয়েছেন।
অন্যদিকে, প্রশংসনীয় ও ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুলিশের ৪০১ কর্মকর্তা ও সদস্যের ‘আইজিপি’স এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিসেস ব্যাজের (আইজিপি ব্যাজ) তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। পুলিশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এ পুরস্কার এবারের পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে দেওয়া হবে।
চলতি বছরের পুলিশ সপ্তাহের শেষদিন ছয়টি বিশেষ ক্যাটাগরিতে মনোনীতদের এ পুরস্কার দেবেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। সম্প্রতি পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, কনস্টেবল থেকে শুরু করে ডিআইজি পদমর্যাদার ৪০১ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য ‘আইজিপি ব্যাজ’ পাচ্ছেন। গতবারের চেয়ে ১৯৪ জন কম পুলিশ সদস্যকে এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০২০ সালের পুলিশ সপ্তাহে আইজিপি ব্যাজ পেয়েছিলেন ৫৯৫ জন সদস্য।
জানা যায়, মনোনীত ৪০১ জনের মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ১৪২ জন, ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ৭৩ জন, ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ১০১ জন, ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে ২২ জন, ‘ই’ ক্যাটাগরিতে ৫৪ জন ও ‘এফ’ ক্যাটাগরিতে ৯ জন রয়েছেন।