অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম।
তিনি বলেন, ‘আপনাকে আমরা এনেছি। হাসিনাকে বিদায় করে, অভ্যুত্থানের পর এই অন্তর্বর্তী সরকার আমরা এনেছি। তাই নিরপেক্ষতার নামে আওয়ামী লীগ যাতে পুনর্বাসিত না হয়, সেদিকে জনগণ খেয়াল রাখছে।’
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে রাজশাহীতে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মহানগরীর বাটার মোড়ে এই সমাবেশের আয়োজন করে জেলা ও মহানগর বিএনপি।
সমাবেশে আব্দুস সালাম বলেন, ‘আজ আমাদের শপথ নেওয়ার সময় এসেছে। শপথ নিতে হবে, গত ১৫ বছর ভারতীয় যেই তাঁবেদার সরকার ক্ষমতায় ছিল, ক্ষমতায় থেকে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। সেই তাঁবেদার সরকার আর যাতে ফিরে না আসতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিদায় হলেও দেশে গণতন্ত্র ফেরেনি; শেখ হাসিনা বিদায় হয়েছে, এখনও গণতন্ত্র ফিরে আসেনি। শেখ হাসিনা বিদায় নিছে, এখনও আমাদের নেতা তারেক রহমান ফিরে আসেনি। তাই এই সরকারকে বলব, নিরপেক্ষ সরকার হওয়ার চেষ্টা কইরেন না। নিরপেক্ষ সরকার না আপনি। আপনাকে আমরা এনেছি।’
আওয়ামী লীগের নেতারা কীভাবে ভারতে পালাচ্ছেন, সে প্রশ্ন তুলে আব্দুস সালাম বলেন, ‘রাজশাহীর যে অবৈধ মেয়র ছিল, জোর করে ক্ষমতা দখলকারী, সেই লিটন আজ কোথায়? কোথায় আছে এখন? ও পালাইছে। গ্রেপ্তার হয়নি। এই সরকার ও ভারতীয় সরকারকে বলি, সীমান্তে কৃষককে হত্যা করা হয়, শ্রমিককে হত্যা করা হয়, ফেলানীকে হত্যা করে তারকাঁটায় ঝুলিয়ে রাখা হয়। আর সীমান্ত পার হয়ে এই আওয়ামী লীগের হোমরাচোমরারা কীভাবে আজ ভারতে যাচ্ছে? তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।’
দ্রব্যমূল্য কমিয়ে সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব জিনিসপত্রের দাম কমান। চাল, ডাল, তেল, লবণের দাম কমান। এখন উপদেষ্টাদের দেখি, তারা প্রায় আড়াই শ স্টেডিয়াম বানানোর পরিকল্পনা করে। স্টেডিয়াম বানানোর কাজ আপনাদের না। আপনাদের কাজ দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করা।’’
গণতন্ত্র রক্ষায় নেতাকর্মীদের লাঠি প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দিয়ে আব্দুস সালাম বলেন, ‘আপনারা ১৭ বছর ধৈর্য ধরেছেন। আরও কয়েক মাস একটু ধৈর্য ধরেন। ধৈর্য ধরা মানে এই না যে রাজপথ ছেড়ে দিতে হবে। ধৈর্য ধরা মানে এই না যে লাঠিটা আওয়ামী লীগকে মেরেছিলেন, ওই লাঠিটা ফেলে দিতে হবে। ওই লাঠিটা স্বযত্নে রাখবেন। যতি আবার গণতন্ত্র ভুলণ্ঠিত হওয়ার জন্য কেউ ষড়যন্ত্র করে, ওই ষড়যন্ত্রকারীর মাঠে লাঠি ভাঙার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ সমাবেশ পরিচালনা করেন।
এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলার আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, কেন্দ্রের সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, দেবাশীষ রায় মধু, রাজশাহী মহানগরের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, দেলোয়ার হোসেন, ওয়ালিউল হক রানা বক্তব্য দেন।