ভোলার তরুণ আশরাফুল ইসলাম দিপুর প্রতারণা মামলার তদন্তে নেমে বিস্মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অষ্টম শ্রেণি পাস ২০ বছরের এই তরুণের অভিনব প্রতারণায় শুধু সরকারি কর্মকর্তারাই বোকা হননি, সর্বশান্ত হয়েছে অনেক স্বল্প আয়ের পরিবারও। এজন্য তিন দিনের রিমান্ড শেষে দিপুকে আরও দু’দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, প্রতারক আশরাফুল ইসলাম দিপু এনএসআই এর পরিচালক পরিচয়ে সরকারি প্রোটোকল নিয়ে কিশোরগঞ্জ, ভৈরবের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে, অসহায় মানুষের সাথেও করে প্রতারণা। এমনকি পরিদর্শন করেছে কারাগারের মতো স্পর্শকাতর স্থান। কখনও দুদক কর্মকর্তা, কখনও পুলিশের ডিআইজি। নানা পরিচয়ে তার বিচরণ ছিল দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
বাজিদপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল শাকির বলেন, বাজিপুরের প্রোগ্রামটা ছিল আনঅফিশিয়াল প্রোগ্রাম। কিন্তু প্রজ্ঞাপনের যে বিষয়টা সেটা সম্ভবত জেলা জজকোর্টের…। তবে আমাদের প্রোগ্রামটা অফিশিয়াল ছিল না।
এই প্রতারক দিপু নানা পরিচয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের যেমন বোকা বানিয়েছেন, ঠিক তেমনই চাকরি দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা। এমনই কয়েকজন ভুক্তভোগী কথা বলেন সংবাদমাধ্যমের সাথে। এদের একজন জানালেন ১১ লক্ষাধিক টাকা দেয়ার কথা।
নীলফামারির মমিনুর রহমান এনএসআই এর সহকারি পরিচালক পদে নিয়োগের প্রলোভনে হারিয়েছেন প্রায় ৩২ লাখ টাকা। তার কাছে যখন চাকরির বিষয়ে আপডেট জানতে চাওয়া হয়, তখন অন্য আইডি থেকে হাসপাতালে তোলা কিছু ছবি পাঠিয়ে বলা হয় দিপু মারা গেছে। একথা শোনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন চাকরিপ্রার্থী মমিনুর রহমান।
ভুক্তভোগী আরেকজন জানান, প্রতারক দিপু এমন শাস্তি পাক যেন জীবনে আর কারও সাথে প্রতারণার চিন্তা তার মাথায় না আসে।
পুলিশ জানিয়েছে, দিপুকে গ্রেফতারের পর এমন অভিনব প্রতারণার শিকার অন্তত ২০ জন তাদের শরণাপন্ন হয়েছে। তার বয়স যদিও ২০ বছর, সে ১৪ বছর বয়স থেকেই এমন প্রতারণা করে আসছে। সে টেকনোলজিক্যালি সাউন্ড।
জানা যায়, এর আগেও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে দিপু। তবে আইনের ফাঁক গলে সে বের হয়ে এসে আবারও জড়িয়ে পড়েছে প্রতারণায়। উল্টো তাকে গ্রেফতার করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেও সে অভিযোগ করেছে বিভিন্ন জায়গায়। সেসব অভিযোগ এখনও তদন্তাধীন।