হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ
কক্সবাজারের টেকনাফে ভারী বৃষ্টিতে এখন পর্যন্ত ৫০টি’র বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে কম হলেও ৮/১০ হাজার পরিবার পানি বন্দী রয়েছে। এ-র ফলে ফসলী জমি, ক্ষেত খামার, চিংড়িগের, লবণের গোলা’র ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মঙ্গলবার ১৮ জুন রাত ৯ টার পর থেকে ভারী ও মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়। টেকনাফে ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ডের তথ্য টেকনাফ আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।
প্লাবিত হওয়া ৫০টি গ্রামের মধ্যে রয়েছে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৮টি গ্রাম, হ্নীলা ইউনিয়নের ১২টি গ্রাম, টেকনাফ পৌরসভার ৭টি গ্রাম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৬টি গ্রাম, সাবরাং ইউনিয়নের ৭টি গ্রাম, বাহারছড়া ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপেও নিম্মা অঞ্চল এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর জানিয়েছেন স্থানীয় নুরুল আলম নামে এক বাসিন্দা।
হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের ১২ গ্রামের ৪ হাজার বেশি পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। এসব গ্রাম হল, জালিয়াপাড়া, সাইটপাড়া, ফুলের ডেইল, আলী আকবর পাড়া, রঙ্গিখালী লামার পাড়া, আলীখালি, চৌধুরী পাড়া, পূর্ব পানখালী, মৌলভীবাজার লামার পাড়া, ওয়াব্রাং, সুলিশপাড়া, পূর্ব সিকদার পাড়া। এসব গ্রামের চলাচলের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
টেকনাফ পৌরসভার কলেজপাড়া, শীলবুনিয়া পাড়া, ডেইলপাড়া, জালিয়াপাড়া, খানকারডেইল, চৌধুরীপাড়া, কেকে পাড়া প্লাবিত হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান।
তিনি জানান, এই ৭ গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দী। পানিতে ডুবে আছে টেকনাফ কলেজসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। পৌরসভার ৭, ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু ঘরবাড়িসহ চলাচলের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া উক্ত এলাকায় মাছের ঘেরসহ লবণের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারি জানিয়েছেন, লম্বা বিল, উলুবনিয়া, আমতলি, মিনাবাজার, উনচিপ্রাং, কাঞ্চনপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, রইক্ষ্যং গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে সাড়ে ৩০০ পরিবার সব চেয়ে বেশি প্লাবিত রয়েছে। এর মধ্যে উনচিপ্রাং এলাকার একটি রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বসতবাড়িগুলোতে ১ ফুট পানি উঠেছে।
বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন জানান, ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের কম বেশি পানি বন্দী। এতে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে ১০ গ্রাম। এতে ১ হাজার পরিবার খুব খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছেন।
সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর হোসেন জানান, তার ইউনিয়নে কমবেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে ৭ টি গ্রাম। এসব গ্রামের পরিবার গুলো খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ভারী বৃষ্টিতে কিছু গ্রামে মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। আমরা তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পাশাপাশি অতিভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের অন্যত্রে সরে যেতে বলা হচ্ছে। এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।