মাত্র ১৩০ টাকা খরচে জেলার ২৯ তরুণ-তরুণীর চাকরি পেয়েছেন পুলিশে। এই চাকরি পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হলো তাদের। মেধা ও যোগ্যতার যথাযথ মূল্যায়ন হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ২৬ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে টিআরসি পদে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ‘পুলিশ হোক জনতার’ কথাটি যেন আজ ঠাকুরগাঁওয়ে সবার মুখে।
পুলিশে চাকরি পেয়ে আনন্দিত মো. সুমন ও সাথি আক্তার বলেন, ছোট থেকে পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম।
ভাবতাম চাকরি পেতে হলে ঘুষ দিতে হবে। এটা নিয়ে অনেক চিন্তিত ছিলাম। এমনকি ভাইবা দেয়ার আগ পর্যন্ত শুনতে হয়েছে টাকা ছাড়া নাকি চাকরি হয় না। কিন্তু সবার ধারণা ভুল। ঘুষ ছাড়া নিজের সক্ষমতা দিয়ে পুলিশে চাকরি পেয়েছি। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। একই কথা জানালেন নিয়োগপ্রাপ্ত আবদুর রহমান ও মৌরি আক্তার।
জেলার সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের বাসিন্দা বিমল চন্দ্র বলেন, আমি একজন দিনমজুর। আমার ছেলে চাকরি পেয়েছে শুধু ১৩০ টাকা খরচ করা হয়েছে। আর কোনো টাকা লাগেনি। আমি ধন্যবাদ জানাই পুলিশকে যারা এতো সুন্দর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিয়োগগুলো নিয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিনা ঘুষ ও তদবিরে নাকি সরকারি চাকরি হয় না, এটা পুরোনো গল্প। বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশে সততার সাথে সৎভাবে চাকরিকে উৎসাহিত করতে ও দুর্নীতি রুখতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ও মহাপরিদর্শক পুলিশ (আইজিপি)-এর আদেশে সারাদেশের মতো ঠাকুরগাঁওয়েও এবার মাত্র ১৩০ টাকা খরচে বিনা ঘুষ ও তদবিরে ২৯ তরুণ-তরুণীর হলো পুলিশের চাকরি। প্রত্যাশা করি, এই সদ্য নিয়োগ প্রাপ্তরা বিনা ঘুষে ও বিনা তদবির ও খরচে চাকরি হওয়ায় সৎভাবে জীবিকা নির্বাহ করে দেশ ও দেশবাসীর সেবা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাবেয়া সুলতানা বলেন, বিনা ঘুষ ও তদবিরে নাকি সরকারি চাকরি হয় না, এমন প্রচলিত কথা ও অভিযোগ এর দৃশ্যপট পাল্টে দিলো ঠাকুরগাঁও পুলিশ বিভাগ। পুলিশে চাকরি পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হলো ২৯ তরুণ-তরুণীর। এটা পুলিশ বিভাগের নিয়োগে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানায় নিয়োগপ্রাপ্তদের জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গতকাল দেয়া শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম, তদন্ত একেএম আতিকুর রহমান, অপারেশন জিয়ারুল ইসলাম, এসআই আনিসসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ। তানভীরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আইজিপি শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে এ নিয়োগ সম্পন্ন করার জন্য কড়া নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমরা পেশাদারিত্ব, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি।