ঘিওরে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থী-পিয়নকে পেটালেন যুবদল নেতা!

মোমিনুর রহমান সালেহী, (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ফুলহারা আঞ্চলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ও একজন কর্মচারীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতা মিনার খানের বিরুদ্ধে।

থানায় অভিযোগ দিলেও কেউ গুরুত্ব দেয়নি, উল্টো আপসের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
— ইয়াসমিন আক্তার, ভুক্তভোগী কর্মচারী

ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৯ জুন দুপুরে, বিদ্যালয়ের ভেতরে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও মামলা গ্রহণে পুলিশের গড়িমসি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বড়টিয়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মিনার খানের ছেলে নাবিল খানের সঙ্গে শিক্ষার্থী রিয়াদ মাহমুদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়, যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে নাবিল খান তার বাবা মিনার খানকে বিষয়টি জানালে মিনার খানসহ আরও কয়েকজন বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে রিয়াদ মাহমুদ ও তার মা ইয়াসমিন আক্তারকে মারধর করেন।

মারধরে রিয়াদের ডান হাত ভেঙে যায় এবং ইয়াসমিন আক্তার গুরুতর আহত হন। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় অভিযুক্তরা ইয়াসমিন আক্তারের গলা থেকে ১৪ আনা স্বর্ণের চেইন ও একটি স্মার্টফোন ছিনিয়ে নেন।

ভুক্তভোগী ইয়াসমিন আক্তার জানান, থানায় অভিযোগ দিলেও এখনো কোনো আইনি সহায়তা পাননি। তিনি বলেন, আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না। সবাই আপস করতে বলছে। অথচ আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি দোষীদের শাস্তি চাই, যাতে তারা আর কাউকে এভাবে নির্যাতন করতে না পারে।

রিয়াদের বাবা মহির উদ্দিনও অভিযোগ করেন, একটা বাচ্চার ঝগড়াকে কেন্দ্র করে ওরা আমার ছেলে ও স্ত্রীকে মারধর করেছে। আমার স্ত্রীর গলার চেইন আর মোবাইলও নিয়ে গেছে। থানায় অভিযোগ দিলেও ব্যবস্থা নেয়নি, উল্টো এখন হুমকি দিচ্ছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি লোকমান হোসেন এ ঘটনাকে ‘সামান্য বিষয়’ উল্লেখ করে বলেন, আমরা মীমাংসা করে দিয়েছি।

একটা শিশুর ঝগড়াকে কেন্দ্র করে আমার স্ত্রী-সন্তানকে বেধড়ক মারধর করেছে। এখন হুমকি দিচ্ছে, চাকরি রাখতে হলে ওদের কথাই মানতে হবে।
— মহির উদ্দিন, ভুক্তভোগীর স্বামী ও শিক্ষার্থীর বাবা

তবে জানা গেছে, অভিযুক্ত মিনার খান তার আত্মীয়।

ঘিওর থানার ওসি জানান, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। স্কুল কমিটি আপসের চেষ্টা করছে। তবে ভুক্তভোগীরা মামলা করতে চাইলে অবশ্যই মামলা নেওয়া হবে।”

অভিযুক্ত মিনার খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।

এ বিষয়ে দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সুশীল সমাজ।